মাওবাদী অভিযোগে ৪ বছর জেলে থাকার পর বেকসুর খালাস বস্তারের সাংবাদিক

সাংবাদিক সন্তোষ যাদবের নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে লাগল দীর্ঘ চার বছর। ২০১৫ সালে মাওবাদী কার্যকলাপের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ২ জানুয়ারি সন্তোষকে বেকসুর খালাস করল জগদলপুর আদালত।
২০১৫ সালে ছত্তিসগড় পুলিশের হাতে মাওবাদী অভিযোগে গ্রেফতার হন হিন্দি পত্রিকা নবভারতের স্ট্রিংগার ২৭ বছর বয়সের সন্তোষ। বস্তারে নিজের বাড়ি থেকে ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাঁকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এই অঞ্চলে পুলিশ ও মাওবাদী দ্বন্দ্বে অনেক সময়েই বলি হতে হয় সাধারণ মানুষকে। যাদব তাঁর এক রিপোর্টে অভিযোগ করেছিলেন, মাওবাদী বলে একটি গ্রামের পাঁচ নাবালককে অবৈধভাবে আটক করেছিল পুলিশ। এদিকে সন্তোষকে গ্রেফতারের সময় পুলিশ দাবি করে, ২০১৫ সালের ২১ অগাস্ট মাওবাদীদের এক হামলায় জড়িত ছিলেন যাদব। সেখানে এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়, আহতও হন এক কর্মী। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র হাতে হিংসায় অংশ নেওয়া, খুনের চেষ্টা সহ একাধিক ফৌজদারি মামলা দায়ের করে পুলিশ। যদিও এরপর যাদব যে ওই মাওবাদী প্যারেডে অংশ নিয়েছিলেন তার কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ। ছত্তিসগড়ের জগদলপুর আদালতে ৫০ জনের বেশি সাক্ষীর মধ্যে ৯০ শতাংশই ছিল পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষী। অবশেষে যাদব সহ মোট ১৮ জনকে এই মামলায় বেকসুর খালাস করেছে আদালত। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যাদব বলেন, চার বছর পুলিশ হেফাজতে নির্মমভাবে অত্যাচারিত হওয়ার পর অবেশেষে নির্দোষ প্রমাণ করতে পেরেছি। এতে আমি খুশি।
সূত্রের খবর, যাদবের বিরুদ্ধে এই মামলায় চার্জশিট দিতে একবছর সময় লেগেছে পুলিশের। জগদলপুর জেলে ছিলেন ওই সাংবাদিক। তাঁর অভিযোগ, সেখানে বন্দিদের একটু ভালো খাবার ও পড়ার জন্য বই চেয়েছিলেন। তারপরেই নাকি বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এর কিছুদিন পর ১৬০ কিলোমিটার দূরে কাঙ্কের জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।  জগদলপুর এনআইএ আদালতে একবার তাঁর জামিন নাকচ হয়। এরপর বিলাসপুর হাইকোর্টও জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। তিনি সুপ্রিম কোর্টে যান। ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়। শর্ত দেওয়া হয়, প্রতিদিন দরভা জেলে তাঁকে হাজিরা দিতে হবে। যাদবের অভিযোগ, সেখানে প্রতিদিন তাঁকে লাঞ্ছিত হতে হত পুলিশের হাতে। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর সন্তোষ যাদবের আশা, তিনি আবার সাংবাদিক জীবন শুরু করতে পারবেন।

Comments are closed.