একাধিক মামলায় ‘রাজনৈতিক মন্তব্য’, বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কট হাইকোর্টের সরকারি আইনজীবীদের

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কট করলেন সরকারি আইনজীবীরা। সোমবার গঙ্গারামপুর পুরসভার অনাস্থা ভোট সংক্রান্ত মামলার শুনানিকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে ঠেলে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে চিঠি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের সরকারি আইনজীবীরা। যদিও আইনজীবীদের একাংশের ব্যাখ্যা, এজলাস বয়কট করলেও, তাতে বিচারপ্রক্রিয়ায় কোনও প্রভাব পড়বে না।
সরকারি আইনজীবীদের অভিযোগ, বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর এজলাসে একাধিক মামলায় ‘রাজনৈতিক মন্তব্য’ করছেন। সরকারি আইনজীবীদের নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের ফলে গঙ্গারামপুর, হালিশহর পুরসভার অনাস্থা ভোট সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানিতে জট তৈরি হয়েছে।
গত ১৯ শে জুলাই বনগাঁ পুরসভার অনাস্থা ভোট সংক্রান্ত মামলার বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিলেন বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। পুরপ্রধানকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বলেছিলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা সঙ্গে নেই। তবুও চেয়ার আঁকড়ে বসে আছেন? এতো নির্লজ্জ কেন আপনি?’ এছাড়া বনগাঁ পুরসভার অনাস্থা ভোটের দিন বিজেপি কাউন্সিলারদের আটকে রাখার অভিযোগ প্রসঙ্গেও প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। জানিয়ে দেন, ফের আস্থা ভোট হবে।
এরপর, বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে তাঁর দলেরই কাউন্সিলারদের অনাস্থা সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ও আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র বাদানুবাদ হয়। সরকারি আইনজীবীদের অভিযোগ, অনভিপ্রেতভাবে যে কোনও মামলায় বনগাঁর প্রসঙ্গ তুলে রাজনৈতিক মন্তব্য করছেন বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়। তাই সোমবার গঙ্গারামপুর পুরসভার অনাস্থা ভোট সংক্রান্ত মামলার শুনানির আগেই সরকারি আইনজীবী ভাস্কর প্রসাদ বৈশ্য জানিয়ে দেন, বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের ১১ নম্বর এজলাসে কোনও মামলাতেই সওয়াল করবেন না তাঁরা। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকেও চিঠি পাঠিয়েছেন সরকারি আইনজীবীরা।

Comments are closed.