দু’বার হেরেছেন দেবশ্রীর কাছে, সিপিএমের কান্তিই এবার রায়দীঘির তারকা প্রার্থী

বাদাবনে একটি কথা প্রচলিত আছে, ঝড়ের আগে কান্তি আসে। কান্তি ভূষণ গাঙ্গুলি। রাজ্য রাজনীতিতে যিনি কান্তি গাঙ্গুলি নামে পরিচিত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দীঘির সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী।
২০১১ বিধানসভা ভোটে ৫০০০ হাজার এবং ২০১৬ সালে মাত্র ১৫০০ ভোটে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবশ্রী রায়ের কাছে হেরে যান তিনি। তবুও এবারে রায়দীঘি কেন্দ্রে ‘কান্তি বুড়ো’ সিপিএমের তারকা প্রার্থী।
মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গাঙ্গুলি নেট মাধ্যমে লিখেছেন, ‘জীবনের শেষদিন পর্যন্ত আমৃত্যু রায়দীঘি-বাসী তথা সুন্দরবন-বাসীদের প্রতিদিনের জীবন সংগ্রাম ও লড়াইয়ের পাশে থাকবো। এ আমার নৈতিক দায়বদ্ধতা’।
এগুলো শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি নয়, সুন্দরবনবাসীর একাংশ বলেন, দু’বার নির্বাচনে হারলেও সুন্দরবনের মাটি কামড়ে পড়ে আছেন তিনি।


সাদা পাঞ্জাবি, সাদা ধুতি, একহাঁটু কাদায় দাঁড়িয়ে বাঁধ মেরামতির কাজে তদারকি করছেন কান্তি গাঙ্গুলি। আয়লা থেকে শুরু করে সম্প্রতি আমফান ঝড়, যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সুন্দরবনবাসীর কাছে অতি পরিচিত দৃশ্য এটি।
প্রয়াত সুভাষ চক্রবর্তীর অনুগামী বলে পরিচিত কান্তি গাঙ্গুলিকে অম্ফান ঝড়ের রাতেও দেখা গিয়েছে কয়েকজন দলীয় কর্মীকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন এলাকাবাসীর। বিরোধীদের অভিযোগ ভোটে জিতলেও তৃণমূলের বিধায়ক দেবশ্রীকে সেভাবে এলাকায় দেখা যায়নি। ২০১৬ সালেও আলিমুদ্দিন আশাবাদী ছিল কান্তি গাঙ্গুলির জয় নিয়ে। তবে সেবারেও হতাশ হতে হয় তাঁকে।


মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে পাঁচ বছর। বাংলার রাজনৈতিক চিত্রপটে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।
২০১৯ এর লোকসভা ভোটের পর রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তির আসন দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তৃণমূলও রায়দীঘির প্রার্থী বদলেছে। রায়দীঘি থেকে ঘাসফুল চিহ্নে ভোট লড়বেন অলোক জলদাতা। দু’বারের জয়ী তারকা প্রার্থী দেবশ্রী ভোটের মুখেই তৃণমূল ছেড়েছেন। গুঞ্জন তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। এহেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিপিএম ভরসা রেখেছেন দলের অভিজ্ঞ সৈনিক কান্তি গাঙ্গুলিতেই।

ইতিমধ্যেই বাম কর্মী সমর্থকেরা কান্তির প্রচারে ঝড় তুলেছেন। সিপিএমের এই হেভিওয়েট প্রার্থীর জন্য তৈরী হয়েছে বিশেষ গানও।
সব মিলিয়ে, বাংলার একুশের নির্বাচনে কান্তি ‘ক্যারিশমা’ সিপিএমের ভোট বাক্সে কতটা প্রভাব ফেলে এখন সেটাই দেখার।

Comments are closed.