দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামে জঙ্গি হানায় পাঁচ বাঙালি শ্রমিকের মারা যাওয়ার ঘটনায় পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় কর্মরত ১৩১ জন বাঙালি শ্রমিককে রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতায়।
সূত্রের খবর, ওই জঙ্গি হানার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক নির্ভরযোগ্য সূত্র মারফৎ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি খবর আসে। তাঁকে জানানো হয়, কাশ্মীরের বারমুলায় নয়জন বাঙালি শ্রমিক আটকে রয়েছেন। তাঁরা দ্রুত রাজ্যে ফিরতে চান। এ ব্যাপারে যেন রাজ্য সরকার সাহায্য করে। তার পরেই মমতা রাজ্যের ডিজিকে কাশ্মীরের ডিজির সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেন। রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্র সিং কথা বলেন সেখানকার ডিজির সঙ্গে। শুরু হয় উপত্যকায় আটকে থাকা বাঙালি শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানোর তোড়জোড়। মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘির বাহালনগর গ্রামের পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার পর জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয় দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সঞ্জয় সিংহকে। তিনি কাশ্মীরের বারামুলা থেকে ওই নয় বাঙালি শ্রমিককে উদ্ধার করে জম্মুতে নামিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন। একটি ট্রাকে করে তাঁদের জম্মুতে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সিআইডি অফিসাররা কাশ্মীরে কর্মরত আরও ১২২ জন বাঙালি শ্রমিকের সন্ধান পান। তাঁদেরও সবাইকে উদ্ধার করে জম্মুতে নিয়ে আসা হয়েছে। ওই বাঙালি শ্রমিকরা মূলত মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি জেলার বাসিন্দা। গোটা বিষয়টি তদারকির জন্য রাজ্যের বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকেল নাগাদ ওই শ্রমিকদের ট্রেনে করে রাজ্যে ফেরার কথা।
মুর্শিদাবাদের বাহালনগর গ্রামের বাসিন্দা শেখ কামরুদ্দিন, শেখ মহম্মদ রফিকদের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি এর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানান মমতা। তাঁর অভিযোগ, কুলগামের শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত।
এদিকে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শনিবার জানান, কাশ্মীরের ঘটনার প্রতিবাদে দলের পক্ষ থেকে সোমবার মোমবাতি মিছিল করা হবে। বিড়লা তারামণ্ডল থেকে ওই মিছিল মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে আসবে। ওই মিছিলে মুখ্যমন্ত্রীরও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
Comments are closed.