কাঠুয়ায় শিশুকে গণধর্ষণ এবং খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত ৬, রেহাই এক নাবালকের

কাঠুয়া মামলায় রায় দিল আদালত। দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন সরকারি অফিসার সহ ৬, রেহাই এক নাবালকের। গতবছর জানুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়ায় ৮ বছরের নাবালিকাকে গণধর্ষণ, নারকীয় অত্যাচার এবং খুনের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় মোট ৭ জনকে। সোমবার পাঠানকোটের বিশেষ আদালত ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এক নাবালক অভিযুক্তকে রেহাই দিয়েছে। দোষী সাব্যস্ত ৬ জনের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক সনজি রাম। এই ব্যক্তিই গোটা ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বলে আদালতে জানিয়েছিল ক্রাইম ব্রাঞ্চ।

দোষী সাব্যস্তদের সর্বনিম্ন সাজা হতে পারে যাবজ্জীবন এবং সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড, বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ৩ রা জুন এই মামলার শুনানি শেষ হয়। জেলা ও দায়রা বিচারক তেজবিন্দর সিংহ সেদিনই জানিয়েছিলেন, সোমবার মামলার রায় দেওয়া হবে। সেই উপলক্ষ্যে আদালত চত্বর জুড়ে নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

২০১৮ সালের ১০ ই জানুয়ারি কাঠুয়ায় একটি ৮ বছরের শিশুকে অপহরণ করে গ্রামেরই একটি মন্দিরে আটকে রাখা হয়। সেখানে অভুক্ত অবস্থায় মাদক খাইয়ে বেহুশ করে, দিনের পর দিন তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। তারপর শিশুটিকে গলা টিপে, পাথর দিয়ে মাথা থেতলে খুন করা হয়। ১৭ ই জানুয়ারি একটি জঙ্গল থেকে শিশুটির পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনার তিনদিন পরে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক নাবালককে আটক করে পুলিশ।

এই ঘটনায় দেশজুড়ে সাড়া পড়ে যায়। প্রতিবাদ শুরু হয় বিভিন্ন জায়গায়। মামলার গুরুত্ব উপলব্ধি করে মামলার তদন্তভার যায় ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে। তথ্য প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগে ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে গ্রেফতার হন স্থানীয় থানার সাব ইন্সপেক্টর এবং এক হেড কনস্টেবল। ২০ শে মার্চ আত্মসমর্পণ করেন অবসরপ্রাপ্ত শুল্ক আধিকারিক সানজি রাম। পরে ক্রাইম ব্রাঞ্চ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করে সানজির ছেলে বিশাল, এক আত্মীয় এবং আনন্দ দত্ত নামে এক বন্ধুকে। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় দুই স্পেশাল পুলিশ অফিসারকেও।

কাঠুয়া কাণ্ডের তদন্ত চলাকালীন দোষীদের পক্ষ নিয়ে মিছিল করে বিজেপি। সেখানে দোষীদের প্রশস্তি করে তাদের মুক্তির দাবি তোলা হয়। সেই মিছিলে দেখা গিয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরে সেই সময় বিজেপি-পিডিপি সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রী চৌধুরী লাল সিংহ এবং চন্দ্রপ্রকাশ গঙ্গাকে। হিন্দু একতা মঞ্চের নামে সেই মিছিলের নিন্দায় সরব হয় গোটা দেশ। এদিকে কাঠুয়ার আইনজীবীরা ক্রাইম ব্রাঞ্চের সদস্যদের চার্জশিট পেশ করতেও বাধা দেয়। কিন্তু রোখা যায়নি তদন্ত, থামেনি বিচার।

Comments are closed.