ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানীকে অকারণ হেনস্থা করেছে কেরল পুলিশ, তীব্র সমালোচনা সুপ্রিম কোর্টের

১৯৯৪ সালে গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগে ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানীকে কেরল পুলিশ যেভাবে গ্রেফতার এবং হেনস্থা করেছিল, শুক্রবার তার তীব্র সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র  জানিয়েছেন, কেবল সন্দেহের বসে নাম্বি নারায়াণন নামের ওই বিশিষ্ট বিজ্ঞানীকে কেরল পুলিশ যেভাবে মানসিক হেনস্থা ও শারিরীক নির্যাতন করেছিল তা অযৌক্তিক ও অপ্রয়োজনীয়। অযথা হেনস্থা করা হয়েছিল তাঁকে। পাশাপাশি এই ঘটনায়, ওই বিজ্ঞানীকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কেরল পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আদালতের এদিনের রায়ে স্বভাবতই খুশি ৭০ বছর বয়সী বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়াণন। প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, এরপর থেকে কেউ তাঁকে আর দোষী বা বিশ্বাসঘাতক বলতে পারবে না। তাঁর কথায় কেরল পুলিশ সেই সময় তাঁর সঙ্গে যা ব্যবহার করেছিল, তার জন্য পুলিশের লজ্জা পাওয়া উচিত। তাঁর কথায়, ‘আমাকে বহু বছর মানসিক যন্ত্রণা ও নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। শীর্ষ আদালতের এই রায়ে শান্তি পেলাম।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে যে সময় এই বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগ আনে কেরল পুলিশ সেই সময় তিনি ইসরোর ক্রায়োজেনিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। অনেকে বলেন, সাতের দশকে এদেশের রকেট প্রযুক্তিতে যে তরল জ্বালানির ব্যবহার নিয়ে কাজ শুরু হয়, তার পথিকৃৎ ছিলেন এই বিজ্ঞানী। পরে ১৯৯৬ সালে ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। পরে সিবিআই জানায়, নাম্বি নারায়াণনের বিরুদ্ধে আনা কেরল পুলিশের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তদন্ত বন্ধ করে সিবিআই। এই ঘটনার পুলিশের তদন্তে যে বিস্তর গলদ ছিল আদালতে তাও জানায় সিবিআই। এরপরই অভিযোগ থেকে রেহাই পান তিনি। ১৯৯৮ সালে কোর্ট তাঁকে  হেনস্থার জন্য রাজ্য সরকারকে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয়। পরে পুলিশি হেনস্থার বিচার চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়াণন। যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ডিকে যতীনকে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম শীর্ষ আদালত। এদিন সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই কেরল পুলিশের সমালোচনা করে নাম্বি নারায়াণনকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি।

Comments are closed.