তালতলার রাজ্য খাদি মেলা জমজমাট, উপচে পড়া ভিড়ে তুঙ্গে ব্যবসা, চলবে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত

বর্ষশেষের দিনে ভিড় একেবারে উপচে পড়ল তালতলার রাজ্য খাদি মেলায়। গত ২০ ডিসেম্বর থেকে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের তালতলা ময়দানে চলছে রাজ্য খাদি মেলা। শেষ হবে ৬ জানুয়ারি। সপ্তাহান্তে এবং বছরের শেষ দিনেও মেলায় বিপুল জনসমাগম ও বিক্রিবাটা হয়েছে।
এ বছর পঞ্চম বর্ষে পা দিল তালতলা ময়দানের সরকারি খাদি মেলা। পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের আধিকারিক বিশ্বজিৎ সরকারের কথায়, এই তালতলা ময়দানে গত কয়েক বছর ধরে ক্রেতার যে আনাগোনা দেখা গিয়েছে, তা অন্যান্য জায়গার চেয়ে ভীষণ ভালো। একই কথা জানালেন, মালদা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি ইত্যাদি জেলা থেকে আসা খাদি ব্যবসায়ীরা। খাদি বস্ত্র থেকে শুরু করে মধু, মোম, ঘি কিংবা গ্রামবাংলার কুটির শিল্পজাত দ্রব্য সবেরই চাহিদা তুঙ্গে। খাদির কুর্তা, শাড়ি, জ্যাকেট বিক্রেতা আশিস রায় জানালেন, এখনও পর্যন্ত সাড়ে চার লক্ষ টাকার জিনিস বিক্রি করেছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত মেলায় যে বিকিকিনি হয়েছে তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেন এই নিয়ে তালতলার মেলায় চতুর্থ বার স্টল দেওয়া আশিস সরকার নামে আর এক ব্যবসায়ী।
তসর, বালুচরী, সিল্ক, সুতির নানা ডিজাইনের শাড়ি, কুর্তা, পাঞ্জাবির বিপুল সম্ভার স্টলগুলিতে। বছর পঁচিশের দীপান্বিতা রায় জানালেন, ১ জানুয়ারি বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিক রয়েছে। তাই খাদি মেলায় পছন্দের পোশাক খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু খাদি মেলা কেন? তরুণীর উত্তর, নতুন বছরে সিল্কের শাড়ি পরব ভেবেছি। তাই বাড়ির কাছে খাদি মেলায় চলে এলাম। এটাই তো খাদি মেলার লক্ষ্য। খাদি মানে যে বয়স্কদের পোশাক, এই ট্রেন্ড ভেঙে রাজ্যের খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের লক্ষ্য নতুন প্রজন্মের চাহিদা, পছন্দ বুঝে খাদির পোশাককে নবীনদের কাছেও সমান জনপ্রিয় করে তোলা।
এদিন মেলাতে বিশাল ভিড় দেখা গেল নলেন গুড়ের একটি স্টলে। রাজ্য সরকারের এমএসএমই দফতরের উদ্যোগে প্যাকেজিং করা এই নলেন গুড়ের চাহিদা খুব। ১৫০ গ্রাম টিউবের দাম মাত্র ৮০ টাকা। রয়েছে ফ্রি স্যাম্পেলিংয়ের সুবিধা। চামচে করে সেই স্যাম্পেল পরখ করেই এই নলেন গুড়ের টিউব কিনতে দেখা গেল প্রচুর মানুষকে। তাছাড়া, মেলার ৭৫ টি স্টলের শাড়ি, পাঞ্জাবি, খাদির জ্যাকেট, বেডশিট, কুশন, রকমারি শৌখিন দ্রব্য, আচার, ঘি- সব দোকানেই ভিড় উপচে পড়তে দেখা গিয়েছে মঙ্গলবার। সেই সঙ্গে মেলার আকর্ষণ বাড়াচ্ছে ছুটির দিনগুলিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বুধবার ইংরেজি বছরের প্রথম দিনে রবীন্দ্রসঙ্গীত, আবৃত্তি, লোকসঙ্গীত ও ম্যাজিক শো-র আয়োজন করা হয়েছে। মেলার প্রথম দিনগুলির মতো শেষ পাঁচদিন যে বিশাল জনসমাগম হবে তা বলাই যায়।

 

Comments are closed.