মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচনে ৩৯৬২ বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি জিতেছে ১২৫৯ টি, সাফল্য ৩১ শতাংশ

মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১৪ থেকে এখনও পর্যন্ত দেশে ৩০ টি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি জিতেছে মাত্র ৬ টি আসন (সাফল্য ২০ শতাংশ)।
যদিও লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে ভারতের মতো এত বড় দেশে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোটের কার্যত কোনও সম্পর্ক নেই, বা কোনও রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের গতি-প্রকৃতি দেখে কিছুই আগাম আন্দাজ করা সম্ভব নয়, তবু পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ বছরে দেশের ৩৯৬২ টি বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে বিজেপির জয়ের হার ৩১.৭৭ শতাংশ। এই আসনগুলি শুধুমাত্র বিভিন্ন রাজ্যে যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে তার, এর বাইরেও কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ বছরে দেশে মোট লোকসভা উপনির্বাচনের চেয়ে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ফল তুলনায় ভালো, কিন্তু তা মোদী-অমিত শাহের অস্বস্তি বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট।
২০১৪ সালে মোদী সরকার গঠনের পর একাধিক বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। বিহার, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, গুজরাত, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, কর্ণাটকের মতো বড় রাজ্যে ভোট হয়। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ এবং গুজরাতে সরকার গঠন করে বিজেপি, বাকি সব বড় রাজ্যেই হেরে যায় গেরুয়া শিবির।
২০১৪ থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মোট ৩৯৬২ টি বিধানসভা আসনে ভোট হয়েছে। তার মধ্যে বিজেপি জিতেছে ১২৫৯ টি আসনে, সাফল্য ৩১.৭৭ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরা এবং অসমে ভালো রেজাল্ট বিজেপির। উত্তর প্রদেশে ৪০৩ টি আসনের মধ্যে বিজেপি একাই দখল করে ৩১২ টি আসন। উত্তরাখণ্ডে ৭০ টির মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৫৭ টি আসন। অসমে ১২৬ টি আসনের মধ্যে বিজেপি জয় পায় ৬০ আসনে। হরিয়ানায় ৯০ টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ৪৭ টি আসন। ত্রিপুরায় সিপিএমকে হারিয়ে প্রথমবারের জন্য ক্ষমতায় আসে বিজেপি। ৫৯ টি আসনের মধ্যে বিজেপি দখল করে ৩৫ টি আসন। হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা ভোটে ৬৮ টির মধ্যে বিজেপি দখল করে ৪৪ টি আসন। ২০১৪ সালে আর এক বড় রাজ্য মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট হয়। বিজেপি ২৮৮ টির মধ্যে জেতে ১২২ টি আসন। সরকারও গড়ে তারা। পাশাপাশি, ২০১৭ সালে বিজেপি গুজরাতে সরকার গড়লেও, মোদীর গড়ে কার্যত তাদের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে বিরোধী কংগ্রেস।
দেশের বাকি সব বড়-ছোট রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ফলাফল কিন্তু চিন্তায় রাখছে গেরুয়া শিবিরকে। কর্ণাটকে সবচেয়ে বড় দল হয়েও সরকার গড়তে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। রাজস্থান এবং মধ্য প্রদেশের মতো বড় রাজ্যেও বিজেপির পারফরমেন্স চিন্তার ভাঁজ ফেলবে মোদী-অমিত শাহের কপালে। এই দুই বড় রাজ্যেই কংগ্রেসের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেও শেষরক্ষা হয়নি। ছত্তিসগঢ়ের ফলও চিন্তায় রাখবে বিজেপি নেতৃত্বকে। বিজেপির সবচেয়ে খারাপ ফল বাম শাসিত কেরল এবং তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গে। কেরলে বিধানসভা ভোটে ১৪০ টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে মাত্র ১ টি আসন। পশ্চিমবঙ্গে ২৯৪ টির মধ্যে বিজেপির দখলে গিয়েছে মাত্র ৩ টি আসন। সেই বছরই বিধানসভা ভোট হয় কেন্দ্র শাসিত পুদুচেরিতেও। সেখানে বিজেপি খাতাই খুলতে পারেনি। ২০১৭ সালে বিধানসভা নির্বাচন হয় পঞ্জাবেও। সেখানে মোট ১১৭ টি আসনের মধ্যে বিজেপি জেতে মাত্র ৩ টি আসনে। ২০১৫ সালে হওয়া বিহার বিধানসভা ভোটে বিজেপি ২৪৩ টি আসনের মধ্যে বিজেপি পায় ৫৩ টি আসন। একই বছর দিল্লি বিধানসভার ভোটে ৭০ টির মধ্যে বিজেপি পায় মাত্র ৩ টি আসন।

Comments are closed.