উত্তরপ্রদেশে ট্রাক দুর্ঘটনায় মৃত পুরুলিয়ার ৪ বাসিন্দা সহ ২৪ জন পরিযায়ী শ্রমিক, বাড়ি ফেরার পথে দেশজুড়ে মৃত্যু অব্যাহত

ফের উত্তরপ্রদেশ। ট্রাক দুর্ঘটনায় ফের পথেই মৃত্যু হল ২৪ জন পরিযায়ী শ্রমিকের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন এ রাজ্যের পুরুলিয়ার ৪ বাসিন্দা। আহত হয়েছেন অন্তত ৩৬ জন।
শনিবার ভোর সাড়ে ৩ টে নাগাদ অউরাইয়া-কানপুর দেহাত রোডের উপর মিহাউলিতে একটি চায়ের দোকানে দাঁড়ায় পরিযায়ী শ্রমিক বোঝাই একটি ট্রাক। তখনই পিছন থেকে আরও একটি পরিযায়ী শ্রমিক বোঝাই ট্রাক ধাক্কা মারে। ধাক্কার অভিঘাতে দুটি ট্রাকই উলটে পড়ে পাশের নালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২৪ জনের। মৃতদের মধ্যে ৪ জন পুরুলিয়ার বাসিন্দা। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
জানা গিয়েছে, যে ট্রাকটি দাঁড়িয়েছিল তা দিল্লি থেকে মধ্যপ্রদেশের ছতরপুরে যাচ্ছিল। আর যে ট্রাকটি তাতে ধাক্কা মারে সেটি রাজস্থান থেকে ঝাড়খণ্ড, বিহার, বাংলায় যাচ্ছিল।
দুটি ট্রাকেই বোঝাই ছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। যাঁরা প্রত্যেকেই নিজের শেষ সম্বলটুকুও দিয়ে ট্রাকের ভাড়া গুনেছিলেন।
তবে এই প্রথম নয়। লকডাউনের ভারতে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্ঘটনায় পড়ার খবর কার্যত দৈনিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৫ মে, শুক্রবার উত্তরপ্রদেশ জুড়ে একাধিক পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মোট ৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁরা সবাই গ্রামে ফিরছিলেন।
১৩ মে, বুধবার রাতে পঞ্জাব থেকে পায়ে হেঁটে বিহারের বাড়িতে ফেরার পথে বাসের তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ৬ জন পরিযায়ী শ্রমিকের। গুরুতর আহত হন আরও ৫ জন। ঘটনাটি ঘটে উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগর জেলার দিল্লি-সাহারানপুর হাইওয়েতে।
১২ মে, মঙ্গলবার যোগীরাজ্যেই দুটি পৃথক দুর্ঘটনায় ৪ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তাঁরাও পরিবার নিয়ে গ্রামে ফিরছিলেন।
৯ মে মধ্যপ্রদেশের নরসিংহপুর জেলায় ট্রাক উল্টে মৃত্যু হয় ৫ পরিযায়ী শ্রমিকের। গুরুতর আহত হন আরও ১৩ জন।
গত সপ্তাহেই মহারাষ্ট্রের অওরঙ্গাবাদে মালগাড়ির চাকায় কাটা পড়েন ১৬ জন ঘুমন্ত পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁরা শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ধরবেন বলে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু রেল লাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে দলটি এতই ক্লান্ত হয়ে পড়ে যে রেললাইনের উপরেই ঘুমিয়ে পড়েন অনেকে। তাঁদের গন্তব্য ছিল মধ্যপ্রদেশ।

লকডাউনের ভারতে বিভিন্ন দুর্ঘটনাজনিত কারণে মোট ৪০০ জন পরিযায়ী শ্রমিক কিংবা তাঁর পরিবারের কারও মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে কেবলমাত্র পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন অন্তত ৭৫ জন পরিযায়ী শ্রমিক। বিভিন্ন পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখে এমনটাই দাবি সমাজকর্মীদের।

Comments are closed.