সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন সঙ্গে মোটা জরিমানার সংস্থান, বিধানসভায় লিঞ্চিং বিল আনছে রাজ্য

গণপ্রহারের ঘটনা রুখতে এবার কড়া আইন আনতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দ্রুতই বিধানসভায় আনা হবে প্রিভেনশন অফ লিঞ্চিং বিল, ২০১৯, বলে সূত্রের খবর।
গণপ্রহারের মতো ঘটনা রুখতে ২০১৮ সালে রাজ্যগুলিকে কড়া আইন আনার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই নির্দেশ মেনে রাজস্থান সহ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই আইন এনেছে। এবার গণপ্রহারের ঘটনা রুখতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও পদক্ষেপ করল।
রাজ্য সরকার মনে করছে, যেভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে চলেছে, তাতে এই আইন আনা জরুরি। গণপিটুনি নিয়ে ২০১৮ সালের ১৭ ই জুলাই সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতেই এই আইন আনতে চাইছে রাজ্য।
বিল অনুযায়ী, গণপিটুনির ঘটনার সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যের যে কোনও প্রান্তে গণপিটুনিতে আহত হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে ৩ বছরের জেল, সেই সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা। যদি নির্মম গণপ্রহারে প্রহৃতের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়, অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তাছাড়াও ২৫ হাজার থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ধার্য করা হবে।
গণপ্রহারে মৃত্যু হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সেই সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
গণপিটুনিতে সরাসরি যুক্ত না থাকলেও, গণপ্রহারের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে বা গণপিটুনিতে প্ররোচনা দিলে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকেও একই সাজার মুখোমুখি হতে হবে।
শুধু তাই নয়, গণপ্রহারের অভিযুক্তদের আড়াল করতে চাইলেও সাজার সংস্থান রাখা হয়েছে বিলে। বলা হয়েছে, গণপিটুনির অপরাধীকে আড়াল করা বা তার গ্রেফতারি ঠেকানোর চেষ্টা বা বিচার প্রক্রিয়া প্রভাবিত করার চেষ্টা করলেও সেই ব্যক্তির ৩ বছরের জেল ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা হবে। এছাড়া, গণপ্রহারের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষীকে ভয় দেখিয়ে বিচার প্রক্রিয়া থেকে সরানোর চেষ্টার কথা প্রমাণিত হলে, ৫ বছর পর্যন্ত জেল ও ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ধার্য করা হবে। রাজ্যে গণপিটুনির ঘটনায় ইন্সপেক্টর র‍্যাঙ্কের নীচে কোনও পুলিশ অফিসার সংশ্লিষ্ট ঘটনার তদন্ত করতে পারবেন না বলে বিলে বলা হয়েছে।
গণপিটুনির মতো ঘটনা রুখতে মাস খানেক আগে প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টরা। যাতে সই ছিল বাঙালি চিত্র পরিচালক অপর্ণা সেন, নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেনদের। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিধানসভায় আনা হবে প্রিভেনশন অফ লিঞ্চিং বিল, ২০১৯।

Comments are closed.