গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি মহিলা কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথ আন্দোলন চায়, মহিলাদের বিপদে পাশে দাঁড়াতে গড়া হচ্ছে কুইক রেসপন্স টিম

রাজ্য সম্মেলন শেষ হয়ে গেলেই সিপিএম শাখা সংগঠন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি যৌথ আন্দোলন নিয়ে কংগ্রেসের মহিলা সংগঠনের সঙ্গে কথা বলবে। সিপিএম এবং তার অন্যান্য গণ সংগঠনের মতো মহিলা সমিতিও এবার কংগ্রেসের সঙ্গে রাস্তায় নেমে আন্দোলন চায়। তাদেরও নজর ২০২১-এর বিধানসভা ভোট।
শুক্রবার থেকে হাওড়ার বালিতে শুরু হচ্ছে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্মেলন। সেই উপলক্ষ্যে বালি স্কুল মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশে ভাষণ দেবেন সংগঠনের সর্বভারতীয় নেত্রী বৃন্দা কারাত, সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম ধাওয়ালে, সর্বভারতীয় সভানেত্রী মালিনী ভট্টাচার্য সহ রাজ্যের নেত্রীরা। সূত্রের খবর, রাজ্য সম্মেলনেও মহিলা কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথ আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। আনা হতে পারে বিশেষ প্রস্তাবও।
অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত সিপিএম তথা বাম নেতৃত্ব তিনটি বিধানসভার উপনির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেই লড়ছে। কালিয়াগঞ্জ এবং খড়গপুরে লড়াই করছে কংগ্রেস, করিমপুরে সিপিএম। তিন কেন্দ্রের কংগ্রেস এবং বাম নেতারা যৌথভাবে মিছিল-মিটিং করছেন। তাতে লাল ঝান্ডা আর হাত মার্কা তেরঙ্গা ঝান্ডা একাকার হয়ে গিয়েছে। সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতারা বুঝতে পেরেছেন, এই রাজ্যে একা লড়াই করে তাঁরা কিছু করে উঠতে পারবেন না। গত লোকসভা ভোটে দুই দলেরই ভোট শতাংশ একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। ২৫ নভেম্বরের উপনির্বাচনের সিপিএম-কংগ্রেস জোট বিশাল কিছু একটা করে ফেলবে, এমনটাও আশা করছেন না দুই দলের নেতারা। তবু একসঙ্গে লড়াই করে যদি প্রাপ্ত ভোট কিছুটা হলেও বাড়ানো যায়, সেটাই তাঁদের লক্ষ্য। দুই দলই চাইছে এই জোট যেন আগামী দিনে আরও মজবুত হয়। আগামী বছর কলকাতা সহ প্রায় একশোটি পুরসভার ভোট রয়েছে। ২০২১-এ বিধানসভা ভোট। এই দুই ভোটেও বাম-কংগ্রেস জোট করেই লড়াই করার পথে এগোচ্ছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, এই উপনির্বাচনে হারা জেতার উপরে সরকার থাকা বা না থাকা নির্ভর করবে না। আমাদের আসল লক্ষ্য ২০২১ এর বিধানসভা ভোট। বৃহস্পতিবার খড়গপুরে কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনী জনসভায় সোমেন মিত্রর সঙ্গে একই মঞ্চে ভাষণ দেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
যৌথ আন্দোলন নিয়ে এর আগে সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে কয়েক প্রস্থ আলোচনা হয়েছে। তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই সিপিএমের যুব সংগঠনের নেতারা দিন তিনেক আগে কংগ্রেসের যুব নেতাদের সঙ্গে যৌথ আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করেন। একইভাবে এসএফআই-ও ছাত্র পরিষদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জোট করে লড়াইয়ের ব্যাপারে। গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির বিদায়ী রাজ্য সম্পাদক কণীনিকা ঘোষ বলেন, রাজ্য সম্মেলন শেষ হলে আমরাও কংগ্রেস সহ অন্যান্য প্রগতিশীল ধর্মনিরপেক্ষ মহিলা সংগঠনের সঙ্গে যৌথ আন্দোলন নিয়ে কথা বলব।
এদিকে মহিলা সমিতি পাড়ায় পাড়ায় তাদের সদস্যদের নিয়ে কুইক রেসপন্স টিম গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোথাও মহিলারা বিপদে পড়লে বা কোনও হেনস্থার শিকার হলে এই টিমের সদস্যরা দ্রুত তাঁদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবেন। কণীনিকা জানান, জেলা সম্মেলনগুলিতে এই টিম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিক রূপরেখাও হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সম্মেলনে তা চূড়ান্ত হবে। তিনি বলেন, তৃণমূল জমানায় রাজ্যে মহিলাদের উপর অত্যাচার বাড়ছে। তার জন্যই আমাদের এই ভাবনা। মহিলা নেত্রী জানান, সংগঠনের বিভিন্ন স্তরে কমবয়সিদের তুলে আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দশটি জেলায় সম্পাদক পদে অপেক্ষাকৃত কমবয়সিদের বসানো হয়েছে। পাশাপাশি দলিত, সংখ্যালঘু, তফশিলিদেরও নেতৃত্বে নিয়ে আসা হবে।

Comments are closed.