৭০ হাজার উদ্বাস্তু পরিবারকে থাকার অধিকার দিচ্ছে রাজ্য, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়

রাজ্যে প্রায় ৭০ হাজার উদ্বাস্তু পরিবারকে এ রাজ্যে থাকার অধিকার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। মমতা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওপার বাংলা থেকে যাঁরা এ দেশে এসে বাস করছেন তাঁদের নাগরিক অধিকার দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।
তিনি জানান, এ পার বাংলার প্রচুর উদ্বাস্তু পরিবার এখানে রাজ্য কিংবা কেন্দ্রের ফাঁকা জমি ও প্রাইভেট জমিতে কয়েক দশক ধরে বাস করছে। তাদের থাকার ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করছে না কেন্দ্র। বরং চিঠি দিয়ে এদের উচ্ছেদ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার এই পরিবারগুলিকে বাংলায় থাকার অধিকার দিচ্ছে, সোমবার মন্ত্রিসভায় এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে প্রায় ১২ হাজার পরিবার আছে। এছাড়া রাজ্য সরকারের ও কিছু ব্যক্তিগত জমিতেও ১৯৭১ সালের পর থেকে প্রচুর মানুষ এসে বাস করছেন। এত বছর তাদের কোনও খবর রাখা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এঁরা না ঘরকা না ঘাটকা হয়ে বেঁচে আছেন। যাঁরা উদ্বাস্তু হয়ে দীর্ঘদিন এ রাজ্যে আছেন তাঁদের নিজস্ব অধিকার আছে। এ ব্যাপারে তাঁর সরকার নতুন আইন করবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য নতুন কমিশন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মমতার মন্ত্রিসভার বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। শীঘ্রই বিধানসভায় এ ব্যাপারে বিল আনা হবে।
নবান্ন থেকে এদিন বুলবুল পীড়িত মানুষের জন্য ত্রাণ শিবির যাত্রার সূচনাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ৪৭ হাজার কিট তৈরি করে  ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে পাঠানো হয়েছে। ওই কিটে  চাল, ডাল, পোশাকের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস রয়েছে। এরকম মোট ৬ লক্ষ কিট তৈরি হচ্ছে। রোজ ১০ হাজার করে এই কিট পাঠানো হবে বুলবুল বিধ্বস্ত জেলাগুলিতে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, যে সব জায়গায় বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুতের ব্যবস্থা চালু করা যায়নি, সেইসব এলাকায় ৪৫ হাজার হ্যারিকেন পাঠানো হয়েছে। যতদিন পরিস্থিতি না স্বাভাবিক হচ্ছে ততদিন চাল-ডাল পাঠাবে রাজ্য। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি ও জমির জন্য সরকারি সাহায্য তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে।

Comments are closed.