৮ ই মার্চ লোকসভার প্রচারে নামছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের জেতা আসনের মধ্যে ৩-৪ টি কেন্দ্রে প্রার্থী বদলের সম্ভাবনা

এ’সপ্তাহেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার কথা। তার আগেই রাজ্যে তৃণমূল প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করে ফেলতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। সূত্রের খবর, আগামী ৮ ই মার্চ আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসের দিন কলকাতায় বড় র‍্যালি করে লোকসভার নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলবে তৃণমূল কংগ্রেস।
এবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় বড় রদবদল হবে না বলে সম্প্রতি দলের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদি জেতা কোনও আসনের প্রার্থী বদল করা হয়, দলে আলোচনা করেই তা ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, এখন সেই তালিকাই চূড়ান্ত করার শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে।
জানা গিয়েছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই থেকে ভোটের প্রচারের জন্য ১২ জনের কমিটি তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের ৪২ টি লোকসভা কেন্দ্রই যে তাঁদের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা, তা আগেই পরিষ্কার করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এই লক্ষ্যে এক ডজন সদস্যকে নিয়ে নির্বাচনী কমিটি গড়ে দিলেন তিনি। এই কমিটির সদস্যরা হলেন, সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, মলয় ঘটক, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শুভেন্দু অধিকারী, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শশী পাঁজা ও ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁরা প্রার্থী বাছাই করার পর, বরাবরের মতোই প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশ মতো প্রার্থী তালিকার ঘোষণার আগেই নাকি শুরু হয়ে গিয়েছে দেওয়াল লিখনের তোড়জোড়।
তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রতি জেলায় বুথ স্তর পর্যন্ত যে কমিটি তৈরি হয়েছে, তাদের সংশ্লিষ্ট বুথের পরিস্থিতি জানাতে হবে উচ্চতর কমিটির কাছে। ভোটের সম্ভাব্য ফলাফলও আগাম জানিয়ে দিতে হবে। ফল প্রকাশের পর তা কতটা মিলল, তা খতিয়ে দেখা হবে। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, এবারের ভোটের লড়াই ব্যতিক্রমী। কারণ, মোদী বিরোধী জোট তৈরিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই নিজের রাজ্যের বাইরেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক গুরুত্ব এবার নজিরবিহীনভাবে বেড়ে চলেছে। ওই তৃণমূল নেতার কথায়, বাংলায় তৃণমূলের আধিপত্য নিশ্চিত করাই মমতার এবারের চ্যালেঞ্জ।
তাই প্রার্থী বাছাই থেকে প্রচার প্রতিটি পদক্ষেপ মেপে ফেলছেন তৃণমূল নেত্রী। বিদায়ী লোকসভায় দলের যে ৩৪ জন সাংসদ ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই এবার ফের টিকিট পাবেন বলে জানিয়েছিলেন মমতা নিজেই। তবে বর্তমান সাংসদদের মধ্যে বোলপুর ও বিষ্ণুপুরের দুই সাংসদের সঙ্গে দলবিরোধী কাজের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ঘাসফুল শিবির। এছাড়া দু’একজন সেলিব্রিটি সাংসদও এবারের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছেন বলে খবর। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রার্থী বাছাইয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সচেতন মুখই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। মমতার নির্দেশ, যাঁরা ভালো কাজ করেছেন, তাঁদের টিকিট দেওয়া হবে। আর কয়েকজনকে যে বাদ দেওয়া হবে, তার আভাস তৃণমূল নেত্রী কোর কমিটির বৈঠকেই দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, আলোচনা করে যাঁকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, দলের সবাইকে তাঁর হয়ে লড়তে হবে।

Comments are closed.