শুনছি ৪৯ দিন লকডাউন হলে ভালো, তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র, মানুষকে যথাসম্ভব ছাড় দেওয়ার চেষ্টা করছি: মমতা ব্যানার্জি

২৪ মার্চ থেকে দেশে শুরু হয়েছে ২১ দিনের লকডাউন। যা প্রবেশ করেছে শেষ সপ্তাহে। এই প্রেক্ষিতে জল্পনা তুঙ্গে এই প্রশ্নে, লকডাউনের মেয়াদ কি বাড়ানো হবে? এই প্রেক্ষিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

বুধবার নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ২ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭১।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন লকডাউন প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই তোলেন ৪৯ দিনের কথা। তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখছি ৪৯ দিন লকডাউন ও সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং চালাতে পারলে করোনা মোকাবিলায় অপেক্ষাকৃত নিরাপদ জায়গায় থাকা যায়। মমতা বলেন, সেই অনুযায়ী ২৪ মার্চ থেকে ৪৯ দিন ধরলে তা হয় ১৯ মে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এও জানিয়ে দেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি বিশেষজ্ঞ নন। দাবির সত্য মিথ্যা নিরুপণ করুন বিশেষজ্ঞরা, তিনি কেবল বোঝেন, লকডাউনের জেরে মানুষের খুব সমস্যা হচ্ছে।

তবে লকডাউন নিয়ে ভারত সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে, রাজ্য তা মেনে নেবে বলেও জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

মানুষের সমস্যা কমাতে যথা সম্ভব ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তৈরি করে দিয়েছেন ৩ টি টাস্ক ফোর্স। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মার্চেন্ট চেম্বারস, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং হসপিটালিটি সেক্টরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে রাজ্য সরকার। সেখানেও মানুষের সমস্যা নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপের সম্ভাবনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কড়াকড়ি করা হবে কিন্তু কোথাও বাড়াবাড়ি যেন না হয়। মমতার কথায়, লকডাউন হোক কিন্তু তার মুখ হোক মানবিক।

দিল্লির নিজামুদ্দিনের ধর্মীয় সমাবেশ নিয়ে ইদানীং দেশ উত্তাল। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার ৬ ঘণ্টার মধ্যে সেই সমাবেশে যোগদানকারী ১০৮ জন বিদেশি এবং ৬৯ জন এ রাজ্যের বাসিন্দাকে রাজারহাটারে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা ব্যাপারটি দেখভাল করছে স্বাস্থ্য দফতর, বলেও জানান মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কখনও কখনও বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে অনেক খবর প্রকাশ্যে জানানো হয় না। এক্ষেত্রেও রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে অত্যন্ত সন্তর্পণে কাজটি সেরেছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, নিজামুদ্দিনে এত বড় সমাবেশ হতে দেওয়া হল কেন?

সম্প্রতি বিতর্কের কেন্দ্রে চলে আসা হাইড্রক্সিক্লোরাইড ওষুধ রাজ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত আছে বলেও জানান মমতা। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে সামলাতে এসএসকেএম হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তার ঢালি শিলিগুড়ি যাচ্ছেন। তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে করোনা মোকাবিলার ভার নেবেন। পাশাপাশি সিনিয়র চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীও একইসঙ্গে শিলিগুড়ি যাবেন। সেখানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে রাজ্যকে রিপোর্ট দেবেন তিনি।

Comments are closed.