নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ করতে হলে আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে করতে হবে, মিছিল শেষে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত বাংলায় প্রতিবাদ ও আন্দোলন চলবে। সোমবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি বিরোধী মিছিলের শেষে জোড়াসাঁকো থেকে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির। তৃণমূল নেত্রীর দৃঢ় ঘোষণা, এ রাজ্যে নাগরিকত্ব আইন কিংবা এনআরসি প্রয়োগ করতে গেলে তাঁর মৃতদেহের উপর দিয়ে করতে হবে।
এদিন দুপুর ১ টা নাগাদ বি আর আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশ থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিল শুরুর আগে আন্দোলনকারীদের শপথ বাক্য পাঠ করান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, এ দেশের প্রতিটি বাসিন্দাই ভারতীয় নাগরিক। আমরা কেউ বাংলা ছেড়ে যাব না।

এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রয়োগ করতে দিচ্ছি না, দেব না। সেই সঙ্গে আন্দোলন যেন কোনওভাবে হিংসার রূপ না নেয় তার জন্য বারবার সাবধান করেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, অসাংবিধানিক’ আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে গণতান্ত্রিকভাবে। কারও প্ররোচনাতেই রাস্তা, ট্রেনলাইন বন্ধ করে, আগুন জ্বালিয়ে আন্দোলনকে হিংসার রূপ দেবেন না। এদিন মিছিল শুরুর আগেও সমর্থকদের উদ্দেশে তৃণমূল নেত্রী বার্তা দেন, কেউ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ মিছিলে হিংসার আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
মিছিল শেষে জোড়াসাঁকো থেকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন মুখমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে মানুষের নজর ঘোরাতেই এই আইনের নামে বিভাজনের খেলায় মেতেছে মোদী সরকার। এদিন নাম না করে রাজ্যপালের একহাত নেন মমতা। বলেন, বিজেপির মতোই বিজেপির দালালদের তীব্র অপছন্দ করেন। প্রসঙ্গত, সোমবার সকালেই রাজ্যপাল ধনকড় ট্যুইট করে মমতার আন্দোলনকে অসাংবিধানিক বলে বর্ণনা করেন। পাশাপাশি, মমতার এও জানান, রাজ্যে বিক্ষিপ্ত অশান্তি ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসনই যথেষ্ট। বিজেপির দাবি মতো, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও প্রয়োজন নেই। অসমে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূল নেত্রীর দাবি, এই আন্দোলন কোনও একটি সংখ্যালঘুর অধিকার রক্ষায় নয়, সর্বধর্ম সমন্বয়ের লড়াই। ভারতের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, সংস্কৃতি বিরোধী কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন তিনি। যতদিন না এই বিভাজনের আইন প্রত্যাহার করা হবে গণতান্ত্রিকভাবে এই আন্দোলন চলবে।
এদিকে মমতার এই মিছিলকে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এদিন সকালে মমতার নেতৃত্বে মিছিল শুরুর আগেই রাজ্যপাল ট্যূইট করে মুখ্যমন্ত্রীকে মিছিল না করার পরামর্শ দেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে একটি রাজ্য সরকার জনগনের টাকায় দেশের আইনকে চ্যালেঞ্জ জানায়। পরে আর এক ট্যুইটে তিনি বলেন, দেশের আইনের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের মন্ত্রীদের মিছিল-সমাবেশে আমি উদ্বিগ্ন।

 

Comments are closed.