মুখ্যমন্ত্রী: দল বা সরকার চালাতে কেউ টাকা চাইলে দেবেন না, জনগণের কাজ করতে কাউকে টাকা দিতে হয় না

দল বা সরকার চালাতে কাউকে টাকা দেবেন না। কলকাতায় পাঠানোর নাম করে কেউ টাকা চাইলে দেবেন না। হুগলির গুড়াপের প্রশাসনিক সভা থেকে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। আর এই টাকা চাওয়া প্রসঙ্গে দল ও প্রশাসনকে বার্তা দিতে গিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী হাতিয়ার করলেন সিপিএমের প্রয়াত নেতা বিনয় চৌধুরীর একটি মন্তব্যকে।

সোমবার বর্ধমানের প্রশাসনিক সভায় সুরজিত কর পুরকায়স্থকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, রসিকতা না বুঝে কিছু সংবাদমাধ্যম ভুল ভাবে খবরটি পরিবেশন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুরজিতবাবু একজন সৎ এবং উজ্জ্বল পুলিশ অফিসার। যাদের বার্তা দিতে এই কথা বলেছিলেন, তারা ঠিকই বুঝতে পেরেছে, মন্তব্য মমতার। তাঁর সাফ কথা, জনগণের কাজ করতে কাউকে টাকা দিতে হয়, এমন ধারণা এখনই পরিত্যাগ করুন।পার্টিকে টাকা দেওয়ার জন্য জেলা থেকে টাকা তোলার দরকার হয় না, একইভাবে সরকারের কাজ করার জন্যও পুলিশকে টাকা দেওয়ার দরকার নেই, বলেন তিনি।

মমতা এদিন অভিযোগ করেন, প্রায়ই শুনতে পাই কলকাতায় টাকা পাঠাতে হবে। কাকে পাঠাবেন টাকা? প্রশ্ন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জানিয়ে দেন, ওই টাকা কারও কাছে পৌঁছয় না। তাই কলকাতায় পাঠানো বা দল চালানোর জন্য কেউ টাকা দাবি করলে, দেবেন না। সংবাদমাধ্যমের একাংশকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা হাজার হাজার কোটি টাকা খেয়ে বসে আছেন, তাদের আপনারা ধরতে যান না।

এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি হুগলি জেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, কেস ডায়েরি লেখায় আরও যত্ন নিতে হবে। পাশাপাশি বাংলার রাস্তা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় ভাগ নিয়ে আপত্তি জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, টাকা খরচ করে কাজ করবে রাজ্য আর পোস্টার ঝুলবে অন্য কারও। তাই রাজ্য নিজেই এই প্রকল্প চালাবে বলে ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এছাড়াও প্রশাসনিক বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলো আমলা-আধিকারিকরা পরবর্তীতে আর মাথায় রাখতে চান না বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর হুঁশিয়ারি, আমি চলে গেলাম, আর সবাই মিলে ঘুমিয়ে পড়লেন, এটা চলবে না। সারপ্রাইজ ভিজিট হবে। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোককে পাঠিয়েও সরাসরি খবর নেবেন বলেও প্রশাসনিক বৈঠকে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রশাসনিক বৈঠকে এদিন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রসঙ্গও আসে। মমতা বলেন, সোনা বা টাকা গচ্ছিত থাকে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য। সেই টাকাও তুলে নেওয়া হয়েছে। আগামীদিনে সরকারি কর্মীদের বেতন কোথা থেকে দেওয়া হবে, তা নিয়ে সন্দিহান মুখ্যমন্ত্রী।

Comments are closed.