করোনার পর দক্ষিণবঙ্গে প্রথম প্রশাসনিক বৈঠকে বিধায়কদের নাম ধরে কাজের খতিয়ান নিলেন মুখ্যমন্ত্রী, গোষ্ঠী কোন্দল বন্ধে কড়া বার্তা

করোনা পর্বে প্রায় ৬ মাস মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর বন্ধ থাকার পর উত্তর বঙ্গ দিয়ে তা ফের শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার খড়গপুর স্টেডিয়ামে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর দক্ষিণবঙ্গের প্রথম প্রশাসনিক বৈঠকে কার্যত বিধানসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দিলেন মমতা ব্যানার্জি। ওই জেলায় একের পর এক বিধায়ককে নাম ধরে ধরে নরমে গরমে জিজ্ঞেস করলেন তাঁদের এলাকায় কাজের অগ্রগতি। জন প্রতিনিধিদের কথায় উষ্মাও প্রকাশ করলেন একাধিকবার।

তৃণমূলস্তরের খবরাখবর তাঁর কানেও আসে। রাজ্যের কোন কোণে কী চলছে কিংবা ঘটছে সেই সম্বন্ধে সম্যক ওয়াকিবহাল মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার খড়গপুর সদরের স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠকে জন প্রতিনিধিদের কার্যত সে কথাই বুঝিয়ে দিলেন মমতা ব্যানার্জি। বৈঠকে হাজির অন্তত ৩ জন তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ককে সরাসরি প্রশ্ন করলেন এলাকায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে। বারবার বললেন, নিজেদের মধ্যে গোলমালের জেরে যেন মানুষের সমস্যা না হয়। প্রদ্যুৎ ঘোষ, আশিস ব্যানার্জি, গড়বেতার নাণ্টি থেকে শুরু করে শিউলি সাহা, শ্রীকান্ত মাহাতো, গীতা ভুঁইয়া, আবার কখনও শঙ্কর দলুই, মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেকের কাছে খোঁজ নেন এলাকার। কয়েকজনকে সতর্ক করে দেন গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে। ।

এলাকায় ২ জনের খুন হওয়ার ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন সরাসরি প্রশ্ন করেন কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহাকে। জানতে চান, খুনে অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়েছে কি? ব্যাপারটিকে পারিবারিক বলে শিউলি সাহা উত্তর দিলেও মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে থামিয়ে বলেন, কোথায় কী হচ্ছে সব খবর আমার কাছে আসে। গড়বেতার তৃণমূল নেতা নান্টিকে নাম ধরে বলেন, সেখানে কেন গোলমালের খবর পাচ্ছি?

এদিন মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত প্রশাসনিক কর্তাদের পরিষ্কার নির্দেশ দেন, পুজো কমিটিগুলোকে রাজ্য ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেবে। তা পাওয়ার ক্ষেত্রে যেন কোনও আমরা-ওরা করা না হয়। প্রত্যেকটি পুজো কমিটি যেন টাকা পায়। এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে আইসিদের নির্দেশ দিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে নবান্নের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রকেই যোগাতে হবে। কারণ স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে একশো শতাংশ অর্থই দিচ্ছে রাজ্য। এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে সাংসদ দেবের কাজের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, দেব আমাকে মাঝেমাঝেই ফোন করে বলে দিদি এ সিঙ্গাপুরে আটকে আছে, ও ওখানে আটকে আছে, ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই জন্যই দেবকে আমার ভালো লাগে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসককে মুখ্যমন্ত্রীর খোঁচা, ফেসবুকটা একটু কম করে ভালো করে কাজ করো।

Comments are closed.