যাদবপুর এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌজন্য নিয়ে প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর, প্রশংসা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের

দু’একটা বিশ্ববিদ্যালয় আছে যাঁরা বিশ্রী রাজনীতি করেন। সৌজন্যের ধার ধারেন না। সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রেসিডেন্সি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী বিদ্বেষের রাজনীতি করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের মতো ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিকেও মান্যতা দেন না তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে রাজনীতি মানুষকে সম্মান করতে জানে না, তেমন রাজনীতিকে তিনি শ্রদ্ধা করেন না। তাঁর কথায়, সৌজন্য ভুলতে বসেছে কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়। কয়েকজনের সংকীর্ণতার জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এমন বিশ্রী ঘটনা ঘটছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু পারস্পরিক সৌজন্য যেন বজায় থাকে। সেটাই আসল শিক্ষা।
প্রসঙ্গত, কয়েক বছর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এক ছাত্রী মঞ্চে উঠেও আচার্য তথা রাজ্যপালের হাত থেকে শংসাপত্র নিতে রাজি হননি। সম্প্রতি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩ তম সমাবর্তনে গিয়ে রাজ্যপাল তথা আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী মন্তব্য করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আরও সজাগ হওয়া জরুরি। পড়াশোনোর ‘আগে ও পরে’ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কী হচ্ছে তা খেয়াল রাখতে হবে। সমাবর্তন মঞ্চে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের সামনেই রাজ্যপালের এহেন মন্তব্যে বিতর্ক ছড়ায়। এর আগে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় একাধিকবার প্রেসিডেন্সি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সমালোচনা করেছেন। অতি সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনের জেরে উপাচার্য, শিক্ষক-শিক্ষিকাকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ঢুকতে দেয়নি সেখানকার আন্দোলনকারী ছাত্র- ছাত্রীরা। ছাত্র আন্দোলনের জেরে ক্যাম্পাসের বাইরে, নন্দন চত্বরে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই ঘটনারও সোমবার তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে, ১৮৫৭ সালে যাত্রা শুরু করা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণমান ও পরিবেশের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বহু প্রখ্যাত মানুষ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছিলেন। বাংলার সংস্কৃতিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। মমতার আবেদন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ওল্ড ভ্যালুজ’ যেন ভবিষ্যতেও রক্ষিত হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে নিজের উপস্থিতিকে নিজের বাড়িতে ফেরা বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন নজরুল মঞ্চে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীকে ডি লিট সম্মান দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ডঃ সুকুমার মুখার্জি ও ডঃ দিলীপ মহালনবিশের হাতে সাম্মানিক ডিএসসি তুলে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ডিগ্রি প্রাপকদের অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Comments are closed.