ধোঁয়া থেকে জ্বালানি, তা দিয়েই ছুটবে গাড়ি, যুগান্তকারী আবিষ্কার আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের

একদিকে, গাড়ির জ্বালানি খরচ, অন্যদিকে ধোঁয়া থেকে পরিবেশ দূষণ, এবার দুই সমস্যা সমাধানে রাশ টানতে যুগান্তকারী আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের। এবার গাড়ি থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডকে ফের জ্বালানিতে রূপান্তরের কৌশল নিয়েছেন আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার ও গবেষকরা।
সাম্প্রতিক সময়ে গাড়ির ধোঁয়ায় নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডকে জ্বালানিতে রূপান্তর করার ব্যাপারে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। তবে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, কীভাবে গাড়ির ধোঁয়া থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে আগের চেয়ে অনেক বেশি ইথেন, প্রোপেন ও ব্যুটেন পাওয়া যায়।
আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এক নতুন অনুঘটক বা ক্যাটালিস্টের মাধ্যমে গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়াকে প্রাকৃতিক গ্যাস ও প্রোপেনে পরিবর্তিত করতে পেরেছেন।
গবেষকদের মতে, এই কৌশল হয়ত পুরোপুরি পরিবেশ দূষণ রোধ করতে পারবে না, কিন্তু সাম্প্রতিক গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের প্রভাব থেকে কিছুটা হলেও নিস্তার মিলবে। যদিও এই প্রক্রিয়া এখনও পরীক্ষার পর্যায়েই রয়েছে। তবে গবেষকরা জানাচ্ছেন, খুব দ্রুত এগোচ্ছে গবেষণা। এখন, গাড়ির ধোঁয়ায় নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডকে ফের জ্বালানিতে পরিবর্তিত করার পাশাপাশি, এই বিক্রিয়া থেকে নির্গত কার্বন মনোক্সাইডের মতো বিষাক্ত উপজাতর পরিমাণ কীভাবে কমানো যায় তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। শুধু গাড়ির জ্বালানি নয়, মোটর গাড়ির ধোঁয়া থেকে অন্যান্য উপযোগী জিনিস পাওয়ার ব্যাপারেও গবেষণা চলছে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, শুধু প্রাকৃতিক গ্যাসই নয়, গাড়ির ধোঁয়া রূপান্তরের মাধ্যমে প্লাস্টিক দ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রধান উপাদান ওলেফিনসও পাওয়া যেতে পারে।
আগের গবেষণায় কার্বন ডাই অক্সাইডকে কার্বন মনোক্সাইডে পরিবর্তিত করা, তারপর তার সঙ্গে হাইড্রোজেন যুক্ত করে হাইড্রোকার্বন জ্বালানি তৈরি হত। এই পদ্ধতিতে জ্বালানি হিসাবে কেবল মিথেন পাওয়া যায়। কিন্তু স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া গবেষণায় ইথেন, প্রোপেন, ব্যুটেনও উৎপাদন করা যাচ্ছে। যার ফলে শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হওয়া এই ৩ হাইড্রোকার্বন কম্পাউন্ডকে সহজলভ্য হবে। এই গবেষণায় সাফল্য এলে গাড়ির জ্বালানি খরচে যেমন সাশ্রয় হবে, তেমনই পরিবেশ দূষণও বহুলাংশে রোধ করা যাবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

Comments are closed.