৩৭০ ধারা নিয়ে বই বিক্রি করে সিপিএম নেতা আটক কংগ্রেস শাসিত মধ্য প্রদেশে

সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-এ ধারা রদ প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের লেখা বই বিক্রি করে কংগ্রেস শাসিত মধ্যপ্রদেশে কোপের মুখে পড়লেন সিপিএম নেতা। বিজেপি নেতার ট্যুইটের প্রেক্ষিতে আটক হন গোয়ালিয়রের প্রবীণ সিপিএম নেতা শেখ ঘানি।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার গোয়ালিয়রের পাদভে সিপিএমের শাখা সংগঠন মুসলিম অধিকার মঞ্চের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে জম্মু-কাশ্মীরের উপর থেকে ৩৭০ ও ৩৫ এ ধারা বিলোপ নিয়ে লেখা একটি বই বিক্রি করা হচ্ছিল। এই প্রেক্ষিতে বিতর্ক উস্কে দেয় মধ্য প্রদেশের বিজেপির মিডিয়া-ইন-চার্জ লোকেন্দ্র পরাশরের একটি ট্যুইট। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, গোয়ালিয়রের ফুলবাগ চৌরাহায় ৩৭০ ধারা রদ নিয়ে আপত্তিকর বই বিক্রি করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও সরকারকে এ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলেন ওই বিজেপি নেতা। এই ট্যুইটের পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। আটক করা হয় প্রবীণ সিপিএম নেতা তথা বিএসএনএলের অবসরপ্রাপ্ত অফিসার শেখ ঘানিকে।
৫ ই অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এই প্রেক্ষাপটে ‘ধারা ৩৭০- সেতু ইয়া সুড়ঙ্গ’ নামে বইটি লেখেন মধ্যপ্রদেশের সিপিএম সম্পাদক যশবিন্দর সিংহ। মোদী সরকারের আমলে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করা হচ্ছে তা নিয়ে নাতিদীর্ঘ আলোচনা রয়েছে ধারা ৩৭০- সেতু ইয়া সুড়ঙ্গ বইতে। সংশ্লিষ্ট বইতে জম্মু-কাশ্মীর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিরও লেখা প্রকাশিত হয়েছে। এই বই বিক্রি করতে গিয়েই বিজেপি এবং মধ্য প্রদেশ প্রশাসনের কোপে পড়তে হয় সিপিএম নেতা ঘানিকে। যদিও পরে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের না করেই ছেড়ে দেওয়া হয়। কীসের ভিত্তিতে সিপিএম নেতাকে আটক করা হয় তা জানতে পাদভ থানায় উপস্থিত হয়েছিলেন দলের নেতারা। পাদভ থানার অফিসার-ইন-চার্জ প্রশান্ত কুমার যাদব জানান, আপত্তিকর বই বিক্রির অভিযোগে সিপিএম নেতাকে আটক করা হয়েছে। এরপর পুলিশ অফিসারকেই বইটি পড়তে দেন সিপিএম নেতারা। কয়েক পৃষ্ঠা পড়ার পরই নাকি হেসে ফেলেন ওই পুলিশ অফিসার। দ্রুত মুক্তি দেওয়া হয় শেখ ঘানিকে। সিপিএম নেতার আটক হওয়া নিয়ে পুলিশ প্রশাসন ও বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মধ্য প্রদেশে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা বইটির লেখক যশবিন্দর সিংহ। বলেন, এক সপ্তাহে বইটি প্রায় ১৫ হাজার কপি বিক্রি হয়েছে। খোদ মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ সহ বিশিষ্ট নেতা-মন্ত্রীদেরও বইটি উপহার দিয়েছেন তিনি। সিপিএম নেতার কটাক্ষ, বিজেপি মিডিয়া ইন-চার্জ আর গোয়ালিয়রের পুলিশ ছাড়া কারোর কাছেই বইটি আপত্তিকর মনে হয়নি।

Comments are closed.