এম পি ল্যাড: রাজ্যসভার সাংসদদের মধ্যে এক নম্বরে মণীশ গুপ্ত, দুইয়ে দোলা সেন, অভিষেক মনু সিংভির এক টাকাও খরচ হয়নি

এম পি ল্যাডের টাকা খরচের নিরিখে তাবড় রাজনৈতিক নেতাদের পিছনে ফেলে বাংলার রাজ্যসভার সাংসদদের মধ্যে এক নম্বরে প্রাক্তন আমলা মণীশ গুপ্ত। দ্বিতীয় স্থানে তৃণমূলেরই শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেন। তিন নম্বর জায়গায় বিতর্কিত তৃণমূল সাংসদ কে ডি সিংহ।
বাংলা থেকে রাজ্যসভার সাংসদ ১৬ জন। তার মধ্যে এই মুহূর্তে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ১৩ জন। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ দু’জন, প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং অভিষেক মনু সিংভি। অন্য রাজ্যসভার সাংসদ সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রত্যেক সাংসদের জন্য বছরে ৫ কোটি টাকা করে বরাদ্দ থাকে এলাকা উন্নয়নের জন্য। এই বছরে ১৯ শে অগাস্ট পর্যন্ত ভারত সরকারের এম পি ল্যাড তহবিলের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের ১৬ জন রাজ্যসভার সাংসদের মধ্যে পারফরমেন্স অনুযায়ী প্রথম স্থানে রয়েছেন ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে যাদবপুরে হারানো তৃণমূল প্রার্থী এবং প্রাক্তন আমলা মণীশ গুপ্ত।
সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাক্তন আইএএস অফিসারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মোট ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে কেন্দ্র রিলিজ করেছে ৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। যা সুদ সমেত হয়েছে ১০ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে ৯ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা উন্নয়নের কাজে ব্যবহারের সুপারিশ করেছেন সাংসদ মণীশ গুপ্ত। গোটাটাই বরাদ্দ করা হয়েছে। খরচ হয়েছে ৯ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে ১২৮.২০। রাজ্যের ১৬ জন সাংসদের মধ্যে উন্নয়নের কাজে তহবিল খরচের নিরিখে এক নম্বরে মণীশ গুপ্ত।
মণীশ গুপ্তর পরেই রয়েছেন শ্রমিক নেত্রী দোলা সেন। দোলা সেনের উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ হয়েছে ১২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। কেন্দ্র রিলিজ করেছে ৭ কোটি ৫০ লক্ষ, যা সুদ মিলিয়ে হয়েছে ৯ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে ৮ কোটি ১১ লক্ষ টাকা সাংসদ চেয়েছেন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে দেওয়ার জন্য। পুরোটাই মঞ্জুর করা হয়েছে। খরচ হয়েছে তার মধ্যে ৮ কোটি ৮ লক্ষ টাকা। শতাংশের হিসেবে যা ১০৫.৬৯। এম পি ল্যাডের টাকা খরচের নিরিখে সতীর্থদের থেকে অনেকটাই পেছনে রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর বরাদ্দ করা টাকার মাত্র ৪৫ শতাংশ খরচ হয়েছে।
এম পি ল্যাডের টাকা খরচের নিরিখে প্রথম সারিতেই রয়েছেন কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি এম পি ল্যাডের বরাদ্দ টাকার ৯৭.৩৭ শতাংশ খরচ হয়েছে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় যাওয়া কংগ্রেসের অপর সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির এম পি ল্যাডের এক টাকাও এখনও খরচ হয়নি। সিপিএমের বহিষ্কৃত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের রিলিজ হওয়া টাকার ৯২.১২ শতাংশ খরচ হয়েছে।
রাজ্য থেকে তৃণমূলের শেষ রাজ্যসভায় গিয়েছেন শুভাশিস চক্রবর্তী, আবীর বিশ্বাস এবং শান্তনু সেন। এম পি ল্যাডের টাকা খরচের ক্ষেত্রে তিন জনেরই পারফরমেন্স অত্যন্ত খারাপ। শুভাশিস চক্রবর্তীর বরাদ্দ করা টাকার ২৯.৮৯, আবীর বিশ্বাসের বরাদ্দ করা টাকার ২৬.৯৬ এবং শান্তনু সেনের বরাদ্দ করা টাকার ৩৮.৪০ শতাংশ খরচ হয়েছে।

Comments are closed.