পুলিশও নিরাপদ নয় যোগীর রাজ্যে, বুলন্দশহরের ঘটনার জেরে উত্তর প্রদেশ সরকারকে চিঠি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের

যে রাজ্যে পুলিশও নিরাপদ নয়, যেখানে ইচ্ছা হলেই পুলিশকে পর্যন্ত নিজেদের পথ থেকে সরিয়ে দিতে পারে সমাজ বিরোধী দুষ্কৃতীরা, সেখানে আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা কী তা সহজেই বোঝা যায়। সোমবার উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহরে হিংসা ও সেই হিংসার মাঝে পড়ে পুলিশ কর্মী সুবোধ কুমা সিংহের মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তর প্রদেশ সরকারকে পাঠানো চিঠিতে, এভাবেই যোগী আদিত্যনাথের  রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
বুলন্দশহরের ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশ সরকারের কাছে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই চিঠি পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। রাজ্যের মুখ্য সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজির উদ্দেশ্যে পাঠানো এই নোটিশে কমিশন বলেছে, গোটা ঘটনার বিবরণ, দোষীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং মৃতদের পরিবারবর্গকে কী সাহায্য করা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের তরফে তার বিস্তারিত রিপোর্ট আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে হবে উত্তর প্রদেশ পুলিশ প্রশাসনকে।
চিঠিতে কমিশন বলেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট দেখে তাদের মনে হয়েছে, রাজ্যে আইনের শাসন নেই এবং পুলিশ- প্রশাসন তাদের দায়িত্ব পালনে সক্ষম নয়। কমিশন মনে করিয়ে দিয়েছে, জনগণ ও তাদের সম্পত্তিকে সুরক্ষা দেওয়া পুলিশ প্রশাসনের প্রধান দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, কিন্তু এক্ষেত্রে তা প্রতিফলিত হয়নি।
উল্লেখ্য, স্থানীয় এক চাষের জমিতে গরুর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে ও এলাকায় বেআইনি কসাইখানা চলছে, তা বন্ধ করতে হবে, এই দাবিতে সোমবার প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয় বলন্দশহরের একটি এলাকায়। ক্রমে তা হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। পথ অবরোধ করা হয়। এলাকায় পুলিশ গেলে তাদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়, স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশের জিপে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। এই হিংসার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে সুমিত নামে ১৯ বছরের এক পড়ুয়া। দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে পুলিশ ইন্সপেক্টর সুবোধ কুমার সিংহ মারা গেছেন বলেও অভিযোগ উঠছে। তাঁর কপালে গুলি লাগে। ২০১৫ সালের দাদরির ঘটনা, যেখানে গো-মাংস রাখার অভিযোগে গণপিটুনিতে খুন হন মহম্মদ আখলাক, সেই ঘটনার প্রথম তদন্তকারী অফিসার ছিলেন সুবোধ। পরে অবশ্য তাঁকে তদন্ত থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, বদলি করে দেওয়া হয়।  বিশেষ তদন্তকারী দলকে বুলন্দশহরের ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন যোগী। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বজরং দল ও ভিএইচ পি।

Comments are closed.