ফেসবুকে লাল সেলাম, কমরেড সম্বোধন, লেনিনের ছবি! অসমে সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে এনআইএ চার্জশিটে যুক্তি

ফেসবুকে ‘লাল সেলাম’ বা ‘কমরেড’ লেখা বা লেনিনের ছবি পোস্ট করলে জেলে যেতে হতে পারে বিজেপি শাসিত অসমে! দায়ের হতে পারে UAPA ধারায় মামলাও! কৃষক নেতা বিট্টু সোনওয়ালদের বিরুদ্ধে পেশ করা এনআইএ চার্জশিট নিয়ে এখন তোলপাড়।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা CAA এর বিরুদ্ধে গত বছর ডিসেম্বর থেকে আন্দোলনের ঝড় ওঠে অসমে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া কৃষক নেতা অখিল গগৈকে গত ডিসেম্বরে দেশবিরোধী কার্যকলাপ আইনে গ্রেফতার করা হয়। চলতি বছরের শুরুতে একই আইনে অখিল গগৈর সঙ্গী বিটু সোনওয়াল-সহ আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে এনআইএ। সম্প্রতি ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (NIA) বিট্টু সোনওয়ালের বিরুদ্ধে দায়ের করা চার্জশিটে জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কমরেড’ ও ‘লাল সেলাম’ এর মতো শব্দে পরিচিতদের সম্বোধন করছিলেন বিট্টু।

প্রসঙ্গত, অখিল গগৈ গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর আটক হন। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ বি, ২৫৩ এ, ১৫৩ বি ধারায় মামলা রুজু করে NIA। এছাড়াও UAPA আইনের ১৮ ও ৩৯ ধারায় মামলা দায়ের হয়। এদিকে ২৯ মে বিট্টু সোনওয়ালের বিরুদ্ধে দায়ের করা চার্জশিটে NIA জানিয়েছে, তিনি লেনিনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে লেখেন, ‘পুঁজিবাদীরা আমাদের যে দড়ি দিয়ে বিক্রি করবে, আমরা তাতেই তাদের ঝুলিয়ে দেব।’

এদিকে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (KMSS), যে দলের পরামর্শকারী অখিল গগৈ, তারা অভিযোগ করেছে, যে অভিযোগের ভিত্তিতে নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, NIA এর ৪০ পাতার চার্জশিটে তার সুনির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ নেই। এই চার্জশিটের কথা উল্লেখ করে KMSS নেতা ভাস্কো সইকিয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তদন্তকারী এজেন্সি কৃষক নেতাদের জোর করে মাওবাদী বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। খোলা বাজারে বিক্রি হওয়া কিছু বই পড়লেই এই ভুল ধারনার অবসান হতে পারত। কিন্তু তদন্তকারীদের আসল উদ্দেশ্য অন্য। তাঁর অভিযোগ, অখিল গগৈকে মাওবাদী বলে অভিযুক্ত করছে NIA। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে এ বিষয়ে কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেনি। তাঁদের কাছ থেকে ‘অ্যান ইন্ট্রোডাকশন অফ সোশ্যালিজম’, ‘কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো’ এবং অন্যান্য কিছু বই বাজেয়াপ্ত করেছে NIA, যেগুলি প্রকাশ্য বাজারে বিক্রি হয়। উচ্চ শিক্ষায় এই বই পড়ে থাকেন প্রায় প্রত্যেকে। কিন্তু এই সবের ভিত্তিতে গগৈদের মাওবাদী বলে দাগানোর চেষ্টা চলছে, যা রীতিমতো হাস্যকর, মন্তব্য ওই কৃষক নেতার।

CAA বিরোধী আন্দোলন নিয়ে সইকিয়া বলেন, মানুষ নিজেদের পরিচয় ও সংস্কৃতি হারিয়ে ফেলার ভয়ে আন্দোলনে নেমেছিল। কিন্তু NIA দাবি করছে, কৃষক নেতারা হিংসায় মদত দিয়েছিলেন। যা ভিত্তিহীন অভিযোগ বলেও দাবি করেন ওই KMSS নেতা।

Comments are closed.