পাকিস্তানের তথ্য পাচারের অভিযোগে ধৃত নিশান্ত কি ‘হানি ট্র্যাপে’র শিকার, তদন্তে উঠে আসছে এমনই তথ্য

গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগে ধৃত ভারতের ব্রহ্মোস ক্ষেপনাস্ত্র প্রকল্পের সাথে যুক্ত তরুণ ইঞ্জিনিয়ার নিশান্ত আগরওয়াল কি তবে সত্যিই ‘হানি ট্র্যাপে’র ফাঁদেই পড়েছিলেন? তদন্তের গতিপ্রকৃতি থেকে যে তথ্য উঠে আসছে তাতে ‘হানি ট্র্যাপে’র সম্ভবনাই প্রবল হচ্ছে। কোর্টে উত্তর প্রদেশ পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াডের তরফে জানানো হয়েছে, নিশান্তের কম্পিউটার ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে জানা গেছে, পাকিস্তান থেকে নিয়ন্ত্রিত নেহা শর্মা ও পূজা রঞ্জন নামাঙ্কিত দুই মহিলার ফেসবুক আইডির সাথে মেসেজের মাধ্যমে কথা বলতেন নিশান্ত। তদন্তকারীদের অনুমান, ভুয়ো ওই দুটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আসলে নিয়ন্ত্রণ করে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এত গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় কর্মরত হয়ে নিশান্ত যেরকম সাধারণ এবং গয়ংগচ্ছ মনোভাব নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতেন, তা তাঁর উচিত হয়নি। কারণ, প্রতিপক্ষ দেশের এজেন্সিগুলি এই ধরনের ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই ফাঁদ পাতে। তবে মনে করা হচ্ছে, বিশেষ কোনও তথ্য বা ক্লাসিফায়েড কোডেড ইনফরমেশন নিশান্তের কাছে ছিল না। যেহেতু তিনি জুনিয়র পদে কর্মরত ছিলেন। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, তাঁদের নজরে আরও কয়েকজন বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন, তাঁদেরও জিঙ্গাসাবাদ করা হচ্ছে।
পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই সহ অন্যান্য দেশের হয়ে চর বৃত্তির অভিযোগে সোমবার গ্রেফতার করা হয় নিশান্ত আগরওয়ালকে।  ভারতের ব্রহ্মোস মিসাইল প্রজেক্টের সাথে যুক্ত এই তরুণ ইঞ্জিনিয়ার মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ব্রহ্মোস এরোস্পেস প্রাইভেট লিমিটেডে কর্মরত ছিলেন। সোমবার সেনা, মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশ পুলিশের যৌথ অভিযানে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
গত চার বছর ধরে নিশান্ত ব্রহ্মোস এরোস্পেস মিসাইল সেন্টারে টেকনিক্যাল রিসার্চ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। কুরুক্ষেত্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে গোল্ড মেডেল সহ উত্তীর্ণ হন নিশান্ত। কৃতী, উজ্জ্বল এই যুবক গত সপ্তাহেই বিয়ে করেন বলে জানা গেছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইয়ং সায়েন্টিস্ট পুরস্কার’ এ সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি। নিশান্তের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনি দেশের সুরক্ষা বিষয়ক তথ্য পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সহ অন্যান্য কয়েকটি দেশের কাছে পাচার করেছেন। ভারত-রুশ যৌথ প্রযুক্তিতে তৈরি বিশ্বের দ্রুততম ক্রুজ মিসাইল বলে খ্যাত ব্রহ্মোসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ নির্মাণের কাজ হয় নাগপুরের এই কেন্দ্রটিতে। ব্রহ্মোসের পাল্লা ৩০০ কিলোমিটার। যেটি স্থল, যুদ্ধ জাহাজ ও যুদ্ধ বিমান থেকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

Comments are closed.