বাংলায় এনআরসি হবে না, বিদ্যাসগরের মূর্তি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে বিজেপির সমালোচনা করে ফের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

অকালবোধনের মতো বিদ্যাসাগরের মূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হয়েছিল। দানবীয় উন্মত্ততায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়েছিল। যারা মূর্তি ভেঙেছিল, তারা আসলে জানেই না বিদ্যাসাগর কে ছিলেন। মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে বীরসিংহ গ্রামে গিয়ে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর ঘোষণা, অনেক কষ্টের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে, সেখানে এনআরসি করে নতুন করে আবার মানুষকে পরাধীন করা হবে না। তাই বাংলায় কোনও এনআরসি হবে না বলে সাফ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর।
এ রাজ্যে এনআরসি চালু হওয়ার আতঙ্কের জেরে একাধিক মৃত্যু হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে মমতার সাফ ঘোষণা, বাংলায় কোনও এনআরসি হবে না। তিনি বলেন, ১০ বছর অন্তর জনগণনার জন্য বাড়িতে বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতেই অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, বাংলার মানুষকে কেউ তাড়িয়ে দিতে পারবে না। তাই এনআরসি নিয়ে গুজবে কান দিতে বারণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিদ্যাসাগরের ২০০ তম জন্মদিবস উপলক্ষ্যে এক বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা করতে গিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে ফিরে আসে লোকসভা ভোটের আগে উত্তর কলকাতায় বিজেপির রোড-শো ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির কথা। সেদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কলকাতায় প্রথম রোড-শো ঘিরে বেনজির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
বিধান সরণির কাছে বিদ্যাসাগর কলেজে ঢুকে বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি ভেঙে ফেলে কিছু দুষ্কৃতী। পরে কলেজ স্ট্রিট চত্বরে আরও একটি বিদ্যাসাগরের মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, মূর্তি ভেঙে কখনও বাংলার ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়া যায় না। বীরসিংহ গ্রামে বিদ্যাসাগরের জন্মস্থানের সার্বিক উন্নয়নের কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি, বিদ্যাসাগর কলেজে আর্কাইভ স্থাপন, বিদ্যাসাগরের নামে অ্যাকাডেমি তৈরি সহ একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন মমতা। প্রত্যেক কলেজকে বিদ্যাসাগরকে নিয়ে সেমিনার করার জন্য ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। এছাড়া সরকারি, বেসরকারি, বাংলা, ইংরেজি যে কোনও মাধ্যমের স্কুলে বিদ্যাসাগরের মতো মনীষিদের নিয়ে আলোচনাসভা, সেমিনার করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Comments are closed.