ক্যান্সার প্রতিরোধে নয়া দিশা, এবছর চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পেলেন আমেরিকা ও জাপানের দুই গবেষক

ঘোষিত হল ২০১৮ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল প্রাপকদের নাম। ক্যান্সার প্রতিরোধে নয়া পথের হদিস দিয়ে এবছর যৌথভাবে নোবেল সম্মান পাচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেমস এ অ্যালিসন ও জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক আসুকু হানজো। সোমবার স্টকহোমে নোবেল অ্যাসেম্বলির তরফে এই পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু কেন নোবেল পাচ্ছেন এই দুই গবেষক? নোবেল কমিটির জুরিরা জানিয়েছেন, ইনহিবিশন অফ নেগেটিভ ইমিউন রেগুলেশন পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরের ভিতরেই ক্যান্সার মোকাবিলার নয়া পন্থা বাতলেছেন অ্যালিসন ও হানজো। এই চিকিৎসা পদ্ধতির পোশাকি নাম চেক পয়েন্ট ইমিউন ইনহিবিটর থেরাপি। সোজা ভাষায় বললে, মানুষের শরীরে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ থেকে এক প্রকার প্রোটিন বেরোয়, যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে দেহের স্বাভাবিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দেয়। ফলে তরান্বিত হয় ক্যান্সার। তা আরও দ্রুত শরীরের বিভিন্ন কোষে ছড়িয়ে পড়ে। এই নয়া ইমিউন ইনহিবিটর থেরাপির মাধ্যমে সরাসরি সেই সকল ক্ষতিকারক প্রোটিনকে আঘাত করা হবে, ফলে তাদের ক্ষতিকারক প্রভাব কমবে। বজায় থাকবে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
তবে নোবেল কমিটির তরফে বলা হয়েছে, গবেষণার বিষয় এক হলেও এই দুই বিজ্ঞানী আলাদা আলাদা ভাবেই এই কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। দুই বিজ্ঞানীর এই কাজকে নোবেল কমিটি যুগান্তকারী আখ্যা দিয়ে বলেছে, ভবিষ্যতে তাঁদের এই আবিষ্কার কর্কট রোগ মোকাবিলায় আরও সাহায্য করবে। নোবেল সম্মানে সম্মানিত হওয়ার পর এই দুই বিজ্ঞানীই তাঁদের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, তাঁরা গর্বিত, এর ফলে ভবিষ্যতের বহু গবেষক ক্যান্সার রোগ নিয়ে গবেষণায় উৎসাহ পাবেন।  গত বছর আমেরিকার তিন জিন গবেষক এই সম্মান পেয়েছিলেন।
আগামী ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে এক অনুষ্ঠানে এই দুই বিজ্ঞানীর হাতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের নোবেল পদক তুলে দেওয়া হবে। এরপর আগামী কয়েক দিনে একে একে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, অর্থনীতি ও বিশ্ব শান্তির জন্য নোবেল প্রাপকদের নাম ঘোষিত হবে। যৌন কেলেঙ্কারির জন্য সাহিত্যে নোবেল এবছর দেওয়া হবে না বলে নোবেল কমিটির তরফে আগেই ঘোষণা করা হয়েছে।

Comments are closed.