আরবিআই-কেন্দ্র বিরোধঃ মোদী উর্জিত প্যাটেল মিটিং

আরবিআই-এর সঙ্গে কেন্দ্রের নজিরবিহীন সংঘাতের মধ্যেই উর্জিত প্যাটেলের মিটিং করলেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের খবর, গত শুক্রবার নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন আরবিআই-এর গভর্নর। দুজনের মধ্যে এই প্রথম মিটিং হয় এবং এই আলোচনার মধ্যে দিয়ে আরবিআই-এর সঙ্গে কেন্দ্রের যে বিষয়গুলি নিয়ে মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল তা কেটে যাবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আগামী ১৯ শে নভেম্বর আরবিআই-এর রেগুলেটার্স বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে, যেখানে উর্জিত প্যাটেলে তাঁর অবস্থানে দৃঢ় থাকবেন বলে মন্তব্য করে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের সমালোচনা করেছেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। এই বোর্ড মিটিইয়ের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরবিআই গভর্নরের সাক্ষাৎ যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। সূত্রের খবর, আরবিআই এবং অর্থ মন্ত্রকের বিরোধের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নিজেও খানিকটা বিরক্ত এবং সেই কারণেই নিজে বিষয়টি খোঁজ নেওয়ার জন্য উর্জিত প্যাটেলের সঙ্গে কথা বলেছেন।
একাধিক বিষয় নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আরবিআই-এর বিরোধের সূত্রপাত। সম্প্রতি কানাঘুষো চলছে, আরবিআই রেগুলেটর্স বোর্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্কের কিছু বিষয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। রেগুলেটার্স বোর্ডের সদস্য হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি মনোনীত করেছে স্বদেশী ভাবধারার অর্থনীতিবিদ এস গুরুমূর্তিকে। অনেকেই মনে করছেন, গুরুমূর্তি কমিটিতে আসার পর পরামর্শ প্রদান ছেড়ে সরাসরি আরবিআই-এর কাজে নাক গলাতে চাইছে বোর্ড। আর সেখান থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতভেদের সূত্রপাত।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তরফে আরবিআই-এর কাছে চিঠি পাঠিয়ে ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা (সারপ্লাস) চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, আরবিআই-এর কাছে এই মুহূর্তে ৯.৫৯ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক তহবিল রয়েছে। যা মূলত আপৎকালীন সময়ের জন্য রাখা হয়। কিন্তু কেন্দ্রের বক্তব্য, যে হিসেব অনুযায়ী এই বিপুল পরিমাণ টাকা আরবিআই জমা রেখেছে, তা সেকেলে এবং রক্ষণাত্মক হিসেব। বাস্তবে এত টাকা আপৎকালীন সময়ের জন্য জমা রাখার প্রয়োজন নেই। তাই এই জমা টাকার প্রায় এক তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ, ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা কেন্দ্রকে দিক আরবিআই। কেন্দ্রের এই প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করেছে আরবিআই। শুধু তাই নয়, কেন্দ্র আরবিআই-এর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে বলেও ঘুরিয়ে অভিযোগ করেছেন ব্যাঙ্কের একাধিক শীর্ষ কর্তা।

Comments are closed.