রাফালের দাম সংক্রান্ত তথ্য আদালতের নয়, বিশেষজ্ঞদের বিচার্য বিষয়, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র

রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনা নিয়ে তদন্ত আদালতের নজরদারিতে হবে কিনা তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হয় বুধবার। শুনানির শুরুতেই অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপালের প্রশ্ন, এই বিষয় নিয়ে কি আদালত বিচার করতে পারে?‌ কেন্দ্রের দাবি, গোটা ব্যাপারটাই বিশেষজ্ঞদের বিচার্য। গত সোমবার আদালতে ৫৯ হাজার কোটি টাকা খরচে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনা সংক্রান্ত তথ্য মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দেয় কেন্দ্র।
অন্যদিকে, কেন্দ্র যাই বলুক না কেন আইনজীবী তথা মামলার অন্যতম আবেদনকারী প্রশান্ত ভূষণের দাবি, রাফালে চুক্তি প্রকাশ্যে নিয়ে আনা হোক। তাঁর দাবি, নিয়মের ফাঁক দিয়ে পালিয়ে বাঁচতে চাইছে কেন্দ্র। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে পরিসংখ্যান পেশ করে তাঁর দাবি, আগে দাম ছিল ১৫৫ মিলিয়ন ইউরো। এখন দাম হয়েছে ২৭০ মিলিয়ন ইউরো। মানে রাফালের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। যদিও অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তি, চুক্তির গোটা বিষয়টা বলে দিলে অন্যরা সুবিধা পেয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, যুদ্ধ বিমানের দাম নিয়ে আদালতকে আর কোনওরকম সাহায্য করতে পারবেন না। তাঁর দাবি, দেশের সংসদকেও যুদ্ধ বিমানের দাম সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেওয়া হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে আবেদনকারীদের আরও অভিযোগ, আলোচনার আগেই রাফাল চুক্তির কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বোচ্চ আদালতে মামলাকারী এম এল শর্মার অভিযোগ, সম্পূর্ণ নথি তাঁরা পাননি, মাত্র কয়েকটি পাতা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে যে নথি মিলেছে, তা দেখিয়ে মামলাকারী দাবি করেন, মে মাসে রাফাল নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। অথচ তার আগেই এপ্রিল মাসে চুক্তির কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এর জবাব দিতে হবে অ্যাটর্নি জেনারেলকে। পাশাপাশি, রাফাল চুক্তি বাতিল করার আবেদন জানিয়েছেন মামলাকারী। তাঁর দাবি, মামলা পাঠানো হোক পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে। প্রসঙ্গত, রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনা সংক্রান্ত তথ্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে জমা দেয় কেন্দ্র মুখ বন্ধ খামের ভেতর। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন এবং অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল নিজেদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা করেই রিপোর্ট জমা দেন। তার আগে রাফালে যুদ্ধ বিমান কেনা সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

Comments are closed.