গান্ধী পদবী ছাড়া আপনার আর কী আছে, লন্ডনে প্রশ্নের মুখে রাহুল। কী বললেন কংগ্রেস সভাপতি

দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া তাঁর লক্ষ্য নয়, এক নির্দিষ্ট আদর্শকে সামনে রেখে তিনি লড়াই করছেন, লন্ডনে জানালেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। শনিবার লন্ডনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল গান্ধী জানান, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে আমি রাজনীতি করছি না। আমি একটা আদর্শগত লড়াই করছি, আর আমার মধ্যে এই পরিবর্তন এসেছে ২০১৪ সালের পর।’
পাশাপাশি সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, কাজ এবং যোগ্যতা দেখে তাঁর মূল্যায়ন করা উচিত, পদবী দেখে নয়। লন্ডনের সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, গান্ধী পদবী ছাড়া তাঁর আর কী আছে বলার মতো? উত্তরে কংগ্রেস সভাপতি জানান, ‘আমার বাবা দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগে থেকেই আমাদের পরিবার ক্ষমতায় ছিল, সেটা অনেকেই ভুলে যান। আমি সেই পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। কিন্তু, আমি কী বলছি, কী করছি তা শুনুন, দেখুন। বিদেশ নীতি, আর্থিক নীতি, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার বক্তব্যের মূল্যায়ন করুন। পদবী দেখে নয়, আমার কাজের, যোগ্যতার বিচার করুন।’ মজা করে সাংবাদিকদের কংগ্রেস সভাপতি পালটা বলেন, ‘আমাকে আপনারা যে কোনও প্রশ্ন করতে পারেন। তারপর আমার বিচার করুন। তবে এর পরও আমার পরিবারের জন্য যদি আমার সমালোচনা করেন, তা করতেই পারেন। তা আমার হাতে নেই।
এর আগে মে মাসে এদেশে রাহুল গান্ধীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ২০১৯ সালে কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হলে তিনি কি প্রধানমন্ত্রী হতে রাজি হবেন? উত্তরে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘কেন নয়!’ রাহুলের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তাঁকে কটাক্ষ করতে শুরু করে বিজেপি। বিজেপি প্রচার করে, রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখছে। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে বিরোধী দলগুলির মধ্যেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর অবশ্য কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক থেকে এই বার্তা দেওয়া হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা মায়াবতী প্রধানমন্ত্রী হলে তাদের কোনও আপত্তি নেই। এই মাসের গোড়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি সফরের সময় রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকও করেন।
সম্প্রতি বিদেশ সফর করছেন কংগ্রেস সভাপতি। দু’দিন আগেই জার্মানিতে রাহুল গান্ধী বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, শুক্রবারই লন্ডনে আরএসএসকে তুলনা করেছিলেন মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে। শনিবার লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, দেশ আজ আক্রান্ত। ভারতবর্ষের সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আজ আক্রমণের মুখে। রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি ভাবেন, কীভাবে এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে আদর্শগত লড়াই করা যায়। কংগ্রেস সভাপতি আরও বলেন, বিজেপিকে সরকার থেকে হঠানোই এখন তাঁদের কাছে প্রধান লক্ষ্য। বিজেপিকে হারানোর পর দেশের সমস্ত বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করা যাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে।

Comments are closed.