দলবদল পার্ট ২: রাজীব, লক্ষ্মী, বৈশালী… আর কে কে?

বিজেপিতে আর কতজন 'বিক্ষুব্ধ' তৃণমূল বিধায়ক?

গত ডিসেম্বরে মেদিনীপুরের সভায় অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ৯ তৃণমূল ও বাম বিধায়ক। তবে দলবদলু নেতা- মন্ত্রীর সংখ্যা এখানেই থামছে না। রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা, শুভেন্দু অধিকারীর মতোই রাজ্যের আরও দুই মন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জি ও লক্ষ্মীরতন শুক্লাও বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। এখানেই শেষ নয়, হাওড়া জেলার দুই বিধায়ক লক্ষ্মী ও রাজীব ব্যানার্জির পাশাপাশি বালির তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়ার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই লিস্টে রয়েছেন উত্তরপাড়ার সাংসদ প্রবীর ঘোষাল সহ আরও কয়েকজন তৃণমূল নেতা ও বিধায়ক।
কানাঘুঁষো শোনা গিয়েছিল আগামী ১১ জানুয়ারি হাওড়ার অমিত শাহের সভায় একাধিক তৃণমূল বিধায়ক ও নেতা গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন। কিন্তু সেই সভা হচ্ছে না। পরিবর্তে আগামী ৩০ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে সভা করার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। এখন তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতাদের দলবদলের দ্বিতীয় পর্যায় অমিত শাহের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হবে নাকি আগামী ৯ জানুয়ারি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার হাত ধর হবে, সেটাই প্রশ্ন।
মঙ্গলবার ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিলেও বিধায়ক পদে থেকে গিয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্লা। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে তিনি ‘আপাতত’ রাজনীতিতে থাকতে চান না বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে লক্ষ্মীর ইস্তফা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশকে নিশানা করেছেন হাওড়ার বালির বিধায়ক বৈশালী। দলের ভিতরে উইপোকার মতো অনেকে ক্ষতি করে দিচ্ছেন বলে তোপ দাগেন তিনি। আর রাজীব ব্যানার্জি বহুদিন ধরেই শুভেন্দুর স্টাইলে অরাজনৈতিক সভা থেকেই তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশকে নিশানা করে যাচ্ছেন। আপাতত তাঁর সঙ্গে আর তৃণমূল নেতৃত্ব যোগাযোগ করতে পারছে না বলে খবর।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, এই ‘বেসুরো’ ও ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতারা বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে অনেক আগে থেকেই ঠিক ছিল। আর এ সম্পর্কে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও ওয়াকিবহাল। তাই বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে দল ও মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে লক্ষ্মী অভিযোগ করছেন, সাড়ে চার বছরের মন্ত্রিত্বে একটিও ফাইল আসেনি তাঁর কাছে। কাজ করতে পারছিলেন তিনি। বৈশালীর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘দল ছাড়লেই অনেকে বেইমান বলতে শুরু করবে। কিন্তু যাঁরা ভিতরে ভিতরে উইপোকার মতো দলকে নষ্ট করেছেন, তাঁরা কি বেইমান নয়?’
গত কয়েক মাসে রাজ্য রাজনীতির দিকে নজর দিলে দেখা যাবে, যে তৃণমূল বিধায়ক ও নেতারা বেসুরো হয়েছেন, প্রথমে বিজেপি যোগের কথা উড়িয়ে দিলেও পরে সেখানেই নাম লিখিয়েছেন। সেটা শুভেন্দু অধিকারী হোন কিংবা শীলভদ্র দত্ত। এবার তৃণমূলের দলবদল পার্ট টু’তে রাজীব, লক্ষ্মী, বৈশালী, প্রবীর ঘোষালরা শামিল হন কিনা তা নিয়েই চূড়ান্ত জল্পনা। সেই সঙ্গে তৃণমূলের আরও ক’জন বিধায়ক ও নেতা গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান সেদিকেও নজর রাজনৈতিক মহলের।

Comments are closed.