রাজ্যের ১৪ টি মেডিক্যাল কলেজে শুরু হচ্ছে র‍্যাপিড টেস্ট, হবে পুল টেস্টও, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৯৮

করোনা সংক্রমণ রোধে রাজ্যে শুরু হচ্ছে র‌্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট ও পুল টেস্ট। শনিবার স্বাস্থ্য ভবনের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, রাজ্যের ১৪ টি মেডিক্যাল কলেজে এই র‌্যাপিড টেস্ট করা হবে। রবিবার পর্যন্ত রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছুঁইছুঁই। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের রেড জোনগুলিতে কতটা সংক্রমণ ছড়িয়েছে তা পরিমাপ করার জন্য র‌্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট করা হবে। অন্যদিকে যে সব জায়গায় সংক্রমণ কম সেই সব এলাকায় শুরু হচ্ছে পুল টেস্ট। দুটি প্রক্রিয়াই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) এর পরামর্শ মেনে শুরু হচ্ছে বলে নির্দেশিকায় জানায় স্বাস্থ্য দফতর।
একটি নির্দেশিকায় বলা  হয়েছে, ২৮ জেলার রেড জোনে র‍্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট করবে সেখানকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। যেমন, কোচবিহারের জন্য কোচবিহার গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ইত্যাদি। অন্য এক নির্দেশিকায় রাজ্যে উপসর্গহীন আক্রান্ত খুঁজতে ভরসা করা হচ্ছে পুল টেস্টের ওপর।

র‍্যাপিড টেস্ট কী?

মনে রাখা দরকার, র‍্যাপিড টেস্ট কোভিড-১৯ নির্ণায়ক কোনও টেস্ট নয়। কোনও ভাইরাস শরীরে আক্রমণ করলে, মানুষের দেহে সেই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার জন্য নিজে থেকেই তৈরি হয় প্রতিরোধী ক্ষমতা। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে অ্যান্টিবডি। যে কোনও রেড জোনের বাসিন্দার র‍্যাপিড  টেস্ট করলে জানা যাবে, সেই ব্যক্তির শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না। বিশেষ অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলে ধরে নেওয়া হবে সদ্য ওই ব্যাক্তির শরীরে সংক্রমণ হয়েছে। তাই চিকিৎসকরা এই পদ্ধতিকে সম্ভাব্য কোভিড আক্রান্ত খোঁজার একটি স্ক্রিনিং বলেই দাবি করেছেন।

পুল টেস্ট কী?

পুল টেস্টে একসঙ্গে ২ থেকে ৫ জনের লালরসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সমস্ত নমুনা এক সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে। এর পর পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষায় ওই মিশ্রিত নমুনা নেগেটিভ হলে বোঝা যাবে যে ক’জন ব্যক্তির লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ভাইরাসের অস্তিত্ব নেই। আর পজিটিভ হলে ধরে নিতে হবে ওই পুলের মধ্যে কোনও একজন কোভিড আক্রান্ত। সেক্ষেত্রে ওই পুলে যে ক’জনের নমুনা মেশানো হয়েছিল, তাঁদের প্রত্যেকের আলাদা করে কোভিড পরীক্ষা করা হবে। আইসিএমআর নির্দেশিকা অনুযায়ী, যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণ ২ শতাংশেরও কম বা একেবারেই নেই, সেই এলাকাতে করা হবে পুল টেস্ট।
২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত সংক্রমণের পরিমাণ যেখানে, সেখানেও পুল টেস্ট হতে পারে। তবে সেখানে পুল টেস্ট করা হবে শুধুমাত্র উপসর্গহীন মানুষের ক্ষেত্রে। যাঁরা কোভিড পজিটিভ রোগীর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে এসেছেন তাঁদের এই পরীক্ষা প্রয়োজনীয় বলে জানিয়েছে আইসিএমআর। কিন্তু ৫ শতাংশের বেশি যেখানে সংক্রমণের পরিমাণ, সেখানে পুল টেস্ট করা যাবে না।

Comments are closed.