অক্সফোর্ডের করোনা টিকার ২য় ও ৩য় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমতি পেল পুণের সিরাম ইন্সস্টিটিউট, ১৬০০ জনের উপর পরীক্ষা

ভারতে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাস সংক্রামিত। এরই মধ্যে সারা বিশ্বকে আশার আলো দেখিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি করোনা টিকার প্রথম পর্যায়ের সফল পরীক্ষা। সম্প্রতি মানব শরীরে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের প্রয়োগ-প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি পেল পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। দেশের ১৭ টি শহরে ১,৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই ট্রায়ালে অংশ নেবেন। সকলের বয়স হবে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে।

ভারতের ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেলের অনুমতিক্রমে শীঘ্রই দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের কাজ শুরু হবে। রবিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিশেষ কমিটি অক্সফোর্ডের টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ছাড়পত্র দিয়েছে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট (SSI) কে।

এসএসআইকে সেফটি ডেটা জমা দিতে বলেছিল সংশ্লিষ্ট কমিটি। সবকিছু খতিয়ে দেখে চার সপ্তাহ অন্তর স্বেচ্ছাসেবীদের উপর দুই ডোজ করে টিকা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যে ১৭ টি জায়গায় ট্রায়াল চলবে তাদের মধ্যে কয়েকটি হল, এইমস দিল্লি (AIIMS Delhi), এইমস যোধপুর (AIIMS-Jodhpur), পুণের বি জে মেডিক্যাল কলেজ, পাটনার রাজেন্দ্র মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (RMRIMS), চণ্ডীগড়ের পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, গোরখপুরের নেহরু হাসপাতাল, বিশাখাপত্তনমের অন্ধ্র মেডিক্যাল কলেজ, মাইসোরের জেএসএস অ্যাকাডেমি অফ হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ।

অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন যদি ঠিকঠাক কাজ করে, তার তার গণ-উৎপাদন শুরু করবে সিরাম ইনস্টিটিউট। সূত্রের খবর, ভ্যাকসিনের দাম রাখা হবে এক হাজার টাকার মধ্যে। পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট হল বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী। প্রতি বছর রেকর্ড পরিমাণ ডোজ উৎপাদন ও বিক্রি হয় এখান থেকেই। এখন ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনার ইনস্টিটিউটের তৈরি এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে চুক্তি করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট।

সিরাম ইনস্টিটিউটের গোটা গবেষণার ওপর নজর রাখছে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল। সম্প্রতি সেই প্যানেলের কাছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করার অনুমতি পেয়ে আবেদন করে ভারতীয় সংস্থা। তাদের অনুমতিক্রমে এবার শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল।

ইতিমধ্যেই ব্রিটেনে অক্সফোর্ড করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও ব্রাজিলে চলছে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল।

Comments are closed.