বিজেপিকে সুবিধে পাইয়ে দিতে আসরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অবসরপ্রাপ্ত কর্তা! মালদহ দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থীর স্বামীর বিরুদ্ধে কমিশনে তৃণমূল

বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনে কলকাঠি নাড়ছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক বাঙালি কর্তা। ভোটারদের প্রভাবিত করতে বাহিনীকে নির্দেশ দিচ্ছেন মালদহ দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থীর স্বামী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ওই কর্তা। রবিবার এমনই অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল তৃণমূল।
সূত্রের খবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্ম সচিবের দায়িত্বে থাকা বাঙালি অফিসার, আর কে মিত্র সশস্ত্র পুলিস বাহিনীর (সিএপিএফ) প্রশাসনিক কাজের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। তবে সম্প্রতি ওই পদ থেকে অবসর গ্রহণের পরে তিনি এখন চুক্তিভিত্তিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। আর কে মিত্রর স্ত্রী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী।
তৃণমূলের অভিযোগ, স্ত্রী বিজেপি প্রার্থী হওয়ায় কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনীকে নানাভাবে প্রভাবিত করে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন আর কে মিত্র। শুধু মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রই নয়, আর কে মিত্রর কারণে গোটা রাজ্যেই স্বচ্ছ এবং অবাধ নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। এই প্রেক্ষিতে রবিবার নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানান তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সি। ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, কয়েক বছর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্মসচিব হিসেবে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিস বাহিনীর (সিএপিএফ) যাবতীয় প্রশাসনিক কাজকর্মের দায়িত্বে ছিলেন আর কে মিত্র। সেই পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি এখন চুক্তিভিত্তিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন এবং অভিযোগ, বকলমে সিএপিএফের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করছেন। নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে, তিন বছর আগে অবসর নেওয়া কোনও আধিকারিক নির্বাচনের সময় বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সরাসরি যুক্ত থাকতে পারবেন না।
ব্যক্তিগতভাবেও আর কে মিত্র কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর গতিবিধির ওপর নজর রাখছেন বলে অভিযোগ করছে তৃণমূল। সুব্রত বক্সির আরও অভিযোগ, এ রাজ্যে বাহিনী মোতায়েনের আগে সব আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন আর কে মিত্র। সেই বৈঠকে কীভাবে বিজেপির হয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করতে হবে তাও শেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ ঘাসফুল শিবিরের। সুব্রত বক্সির অভিযোগ, সিএপিএফকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, রুট মার্চ করার সময়ও তাঁরা যেন বিজেপিকে জেতানোর জন্য ভোটারদের কাছে আবেদন করেন! তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ওই চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক হিসেবে আর কে মিত্র নিরপেক্ষতার ধার ধারছেন না। সুব্রত বক্সির কথায়, এটা অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। তাঁর আশঙ্কা, এমন হস্তক্ষেপে লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীরা অন্যায্যভাবে সুবিধা পাবেন।
তৃণমূলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।

Comments are closed.