ভোটের সময় গদ্দারটা গুন্ডামি করতে এলে আটকে দেবেন, খেজুরি থেকে তোপ মমতার

তৃণমূল নেত্রী বলেন, আমায় পূর্ব মেদিনীপুরে আসতে দেওয়া হত না

শনিবার হলদিয়ার জনসভা থেকে অধিকারীদের নাম না করে তীব্র আক্রমণ শানালেন তৃণমূল নেত্রী। ডিসেম্বরে বিজেপিতে যোগ দিয়েই শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, তোলবাজ ভাইপো হঠাও দেশ বাঁচাও’। এদিনের জনসভা থেকে মমতার তোপ, আজ তৃণমূলকে তোলাবাজ বলছে, ওদের থেকে বড় তোলাবাজ নেই। অন্যান্য সভার মত মমতা এদিনও অধিকারীদের গদ্দার, মীরজাফর বলে আক্রমণ শানান। বলেন, মেদিনীপুরের কিছু গদ্দার, মীরজাফর যাঁকে পছন্দ হত না, তাঁকেই জেলে ভরে দিত। তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যে এদিন পাঁশকুড়ার আনিসুরের কোথাও উঠে আসে।
এদিন ফের আরেকবার মমতা দাবি করেন, মেদিনীপুরের দায়িত্ব তিনি এতদিন অধিকারীদের হাতে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলেন। তৃণমূল নেত্রী বলেন, আমায় পূর্ব মেদিনীপুরে আসতে দেওয়া হত না। আগে মেদিনীপুরের কোথাও এলে অনুমতি নিয়ে আসতে হত। এখন আমি স্বাধীন।
নাম না নিয়ে অধিকারী পরিবারকে তীব্র আক্রমণ, এতদিন কিছু গদ্দারকে পুষেছিলাম। এখন বিদায় হয়েছে, বেঁচে গেছি। মমতা ব্যানার্জির তোপ, এখানে আগে গদ্দারদের জনিদারি চলত। সম্পত্তি বাঁচাতে, করে খাওয়ার জন্য আজ বিজেপিতে চলে গেছে। আবার বুক ঠুকে বলছে ১৪ সাল থেকে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ! ভাবুন একবার। খেজুরির সভা থেকে মমতা বলেন, আমি এখন মাঝে মাঝেই আসব। তারপরই শুভেন্দুর নাম না করে তৃণমূল নেত্রীর তোপ, ভোটের সময় গদ্দারটা গুণ্ডামি করতে এলে আটকে দেবেন।

[আরও পড়ুন- প্রার্থী বদলের দাবিতে রেল অবরোধ বিজেপি কর্মীদের]

খেজুরির বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক এখন বিজেপিতে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগও কম নয়। এমনকি নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর প্রথম জনসভায় রটে গিয়েছিল খেজুরির বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। তারপরই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা। পরিস্থিতি এমন হয় যে সভা ভণ্ডুল হয়ে যায়। সেই রঞ্জিত মণ্ডলের দিকে ইঙ্গিত করে মমতা বলেন, এখানকার আগের বিধায়কের নামে অনেক অভিযোগ ছিল। এখন তো গদ্দার হয়ে গেছে। তাই ওকে টিকিট দেইনি। এবার আমার প্রার্থী ভদ্র এবং শিক্ষিত লোক। মমতা ব্যানার্জির আবেদন, আপনারা যদি আমাকে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চান তাহলে তৃণমূলে ভোট দেবেন। আর যদি আমাকে দেখতে না চান ভোট দেবেন না। মনে রাখবেন ২৯৪ কেন্দ্রেই আমি প্রার্থী।
২০২০ এর ডিসেম্বরে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেন। নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মমতার ডান হাত তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই অবিভক্ত মেদিনীপুরে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাতে শুরু করে। শুভেন্দু যোগ দিয়েই দাবি করেছিলেন তাঁর বাড়িতে পদ্ম ফুটবে। এক ভাই বিজেপিতে ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন। অন্য এক ভাই এখনও তৃণমূলে। অধিকারী পরিবারের কর্তা শিশির অধিকারী খাতায় কলমে তৃণমূলে থাকলেও তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য থেকে স্পষ্ট বিজেপিতেই যাবেন তিনি।
মেদিনীপুরের মাটিতে নিজেদের দখল রাখতে তৃণমূল যে বদ্ধপরিকর, তা মমতার নন্দীগ্রামে নিজেকে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই পরিষ্কার। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে নেত্রী যেভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের একের পর এক সভায় নাম না করে কাঁথির অধিকারীদের আক্রমণ শানাচ্ছেন তাতে একটা জিনিস পরিষ্কার, মেদিনীপুরে দাপট কায়েম রাখতে চেষ্টার ত্রুটি করছেন না মমতা ব্যানার্জি। আর তা করতে গিয়ে তীক্ষ্ণ আক্রমণ করছেন শান্তিকুঞ্জের বাসিন্দাদের।

Comments are closed.