যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়: সংঘাতে রাজ্য-রাজ্যপাল, রাজ্যপালের ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক, বলল তৃণমূল

বাবুল সুপ্রিয়কে কেন্দ্র করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কাণ্ড নিয়ে এবার সংঘাতে নয়া রাজ্যপাল জগদীপ ধানকর এবং রাজ্য সরকার।
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে রাজ্যপাল জগদীপ ধানকরের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়াকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ও ‘বিস্ময়কর’ বলে মন্তব্য করল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের দাবি, রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাবুল সুপ্রিয়। বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনভিপ্রেত ঘটনার সঙ্গে লোকসভা ভোটের আগে বিদ্যাসাগর কলেজে ঢুকে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনার তুলনা টেনেছে তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবিভিপির এক অনুষ্ঠানে গিয়ে হেনস্থা হতে হয় বাবুল সুপ্রিয়কে। কয়েক ঘন্টা ধরে কলেজ ক্যাম্পাসে ঘেরাও হয়ে থাকার পর খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধানকর গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। নিজের গাড়িতে করে বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে কলেজ চত্বর থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এই ঘটনায় রাজ্যপাল ও বিজেপি মন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এক বিবৃতিতে জানান, যেভাবে বিজেপি নেতাকে উদ্ধার করতে রাজ্যপাল নিজেই যাদবপুর চলে গিয়েছিলেন তা দুর্ভাগ্যজনক ও বিস্ময়কর। মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র ভূমিকারও কড়া নিন্দা করেছে তৃণমূল। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারকে অবহিত না করেই বিজেপির ছাত্র সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সে সময় এবিভিপির সমর্থকরা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে অনভিপ্রেত পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্যের অনুপস্থিতি এবং তাঁর সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পুলিশ বাহিনী অপেক্ষা করে বলে তৃণমূলের বিবৃতিতে দাবি।
এরপরেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে তেমন আলোচনা ছাড়াই বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে রাজ্যপাল চলে যান বলে দাবি তৃণমূলের। যাওয়ার পথে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী বেশ কয়েকবার রাজ্যপালকে অনুরোধ করেন, একজন সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে এই সময়ে তাঁর যাদবপুর যাওয়া ঠিক হবে না। শান্তিপূর্ণভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রাজ্যপালের কাছে কিছু সময় চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তারপরেও বিজেপি নেতাকে উদ্ধার করতে রাজ্যপাল যাদবপুরের উদ্দেশে রওনা হন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করলেও, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিজেপি ও এবিভিপির সমর্থকদের ভাঙচুরের বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি রাজ্যপাল। তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। পাশাপাশি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনার দায় কোনওভাবেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও পুলিশের নয় বলে দাবি করা হয়েছে বিবৃতিতে।
অন্যদিকে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। সূত্রের খবর, চিঠিতে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।

Comments are closed.