বাঁধ ভেঙে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল ১৮ জনের, বাঁধ ভাঙার জন্য কাঁকড়াকে দায়ী করলেন মহারাষ্ট্রের জল সংরক্ষণমন্ত্রী

তিন দিন আগেই মহারাষ্ট্রে বাঁধ ভেঙে জলে তলিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল ১৮ জনের। এখনও নিখোঁজ অনেকেই। ভেসে গিয়েছে একাধিক গ্রামের বহু বাড়ি। এবার সেই বাঁধ ভাঙার জন্য কাঁকড়ার ঘাড়ে দোষ চাপাল মহারাষ্ট্র সরকার।
‘বাঁধ ভেঙেছে কাঁকড়ার জন্য, নদীবাঁধ নির্মাণে কোনও ভুল ছিল না’, রত্নাগিরির তিওয়ার বাঁধ ভাঙার এমনই বিচিত্র ব্যাখ্যা দিলেন মহারাষ্ট্রের জল সংরক্ষণমন্ত্রী তথা শিবসেনা নেতা তানাজি সাওয়ান্ত। রাজ্যের মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর হাসির রোল উঠেছে বিভিন্ন মহলে। সমালোচনা করছেন অনেকেই। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিরোধীদের কটাক্ষ, অবিলম্বে খুনের অভিযোগে কাঁকড়াদের গ্রেফতার করা হোক।
মুম্বই সহ মহারাষ্ট্রে ক’দিনের টানা বৃষ্টিতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এর মধ্যে গত মঙ্গলবার রাতে রত্নাগিরির জেলার তিওয়ার বাঁধ ভেঙে মৃত্যু হয় ১৮ জনের। জলের তোড়ে ভেসে যায় বেশ কয়েকটা গ্রাম। ২০০৪ সালে তৈরি হওয়া এই বাঁধ ভাঙার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তানাজি সাওয়ান্ত বলেন, ইদানীং নদী বাঁধে প্রচুর কাঁকড়ার বসবাস ছিল, তাদের জন্যই বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছিল। এরপরে টানা বৃষ্টিতে সেই ফাটল ভেঙেই বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি, বাঁধ ভাঙাকে ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ আখ্যা দিয়ে শিবসেনা নেতার মন্তব্য, অদৃষ্টে যা আছে, তাই হবে। কিন্তু বাঁধ পরিস্থিতি কেন আগে থেকে পর্যবেক্ষণ করেনি রাজ্য প্রশাসন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী তানাজি সাওয়ান্ত বলেন, প্রশাসনের নজরে এই ব্যাপার আসতে বেশ দেরি হয়ে গিয়েছিল। বিপদসীমার ওপরে জল চলে এসেছিল। তাই আর বিপদ আটকানো সম্ভব হয়নি।
মন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। বিজেপি চালিত মহারাষ্ট্র সরকারকে ‘নির্লজ্জ’ বলে মন্তব্য করেছে এনসিপি। তাদের কটাক্ষ, মন্ত্রীর কথা মতো যদি বাঁধ ভাঙার জন্য কাঁকড়া দায়ী থাকে, তবে আইপিসির ৩০২ ধারায় কাঁকড়াদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হোক। তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করুক মহারাষ্ট্র পুলিশ। শুক্রবার এনসিপি নেতা জিতেন্দ্র আওহাদ এক ব্যাগ কাঁকড়া নিয়ে থানে পুলিশ স্টেশনে হাজির হন। দাবি করেন, কাঁকড়াদের আটক করা হোক।

Comments are closed.