এত পাকিস্তান, পাকিস্তান করেন কেন, পাকিস্তান কি আপনাদের বন্ধু? পাহাড় থেকে বিজেপিকে কটাক্ষ মমতার

অমিত শাহ-সহ বিজেপির তাবড় নেতা-মন্ত্রীরা অভিযোগ করে আসছেন, মমতা ব্যানার্জি ও অন্য বিরোধী নেতারা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন, বিভ্রান্ত করছেন, মিথ্যে প্রচার করছেন। বুধবার দার্জিলিং থেকে তার জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, আমরা মিথ্যে বললে, সত্যি কোনটা পরিষ্কার করে দিন।
মঙ্গলবারই লখনউ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে খোলাখুলি বিতর্কে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি, রাহুল গান্ধীদের। বুধবার দার্জিলিং-এ নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি এবং এনপিআর বিরোধী সভা থেকে তাঁর প্রত্যুত্তর দিলেন মমতা। তাঁর কথায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জ্ঞান দিয়েছেন, অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। যদি আমরা মিথ্যে বলে থাকি, সত্যি কোনটা জনসমক্ষে বলুন। কেন ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিন অমিত শাহরা। নেত্রী বলেন, আমাদের গালি দিয়ে দেশ খালি করা যাবে না। যতদিন না নাগরিকত্ব আইন, এনপিআরের নতুন কলাম প্রত্যাহার করা হচ্ছে, ততদিন  তাঁদের আন্দোলন জারি থাকবে বলে ফের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।


মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, দেশের অর্থনীতির হাল থেকে নজর ঘোরাতেই বিভাজনের রাজনীতি করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তিনি বলেন, ছাত্র-শিক্ষকরা এর প্রতিবাদ করলে হুমকি দেওয়া হয়, রাজনৈতিক নেতাদের পিছনে কেন্দ্রীয় এজেন্সি লেলিয়ে দেওয়া হয়। কেউ বিরুদ্ধ মত পোষণ করলেই পাকিস্তানি বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়। মমতার কটাক্ষ, পাকিস্তান কি আপনাদের বন্ধু? নাকি আপনারা পাকিস্তানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর?
পাশাপাশি, মমতা হুঁশিয়ারি দেন, বাংলায় এনআরসি করতে হলে আগে তাঁকে তাড়াতে হবে, তারপর অন্যদের। পারলে সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুক বিজেপি। তাঁর কটাক্ষ, ভোটের সময় দার্জিলিঙে গোর্খাল্যান্ড দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় বিজেপি। আর ভোট ফুরোলেই চলে যায়। ওদিকে অসমে গোর্খা, বাঙালিদেরই এনআরসি তালিকায় জায়গা হয় না। মমতা বলেন, কারও পদবি, সম্প্রদায়, ধর্ম, ভাষা যাই হোক না কেন, দেশে থাকা প্রতিটি বাসিন্দার পরিচয় হল তাঁরা ভারতবাসী। তাই স্বাধীনতার এত বছর পর তাঁদের নাগরিকত্বের প্রমাণ চাওয়ার কোনও অধিকার নেই মোদী সরকারের।
তৃণমূল নেত্রীর কটাক্ষ, রাজনৈতিক লড়াইয়ে পেরে উঠতে না পেরে এখন অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এনপিআর, এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইনের ভয় দেখাচ্ছে বিজেপি। কিন্তু তাঁকে ভয় দেখানো সম্ভব হবে না। দেশের শ্রমিক, কৃষক, হিন্দু-মুসলমান, সব সম্প্রদায়ের মানুষকে আগে জিজ্ঞেস করতে তাঁরা এইসব আইন ও নীতি চান কি না।

Comments are closed.