খর্ব হচ্ছে মৌলিক অধিকার, সংশোধিত ইউএপিএ আইনকে অসাংবিধানিক দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা

কেন্দ্রের বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ) সংশোধিত বিলকে অসাংবিধানিক দাবি করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের সুপ্রিম কোর্টে।
গত মাসেই ইউএপিএ সংশোধনী বিল পাশ করায় কেন্দ্র। এই বিলের একটি ধারা অনুযায়ী, যদি কোনও ব্যক্তি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে ইন্ধন যোগানোয় যুক্ত থাকে, কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থাকলেও, তাঁকে গ্রেফতার করে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার অধিকার রয়েছে সরকারের। ইউএপিএ সংশোধনী বিলে আরও বলা হয়েছে, প্রয়োজনে দেশের যে কোনও মানুষের বাড়িতে তল্লাশি চালানো ও তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অধিকার থাকবে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) হাতে।
দিল্লির বাসিন্দা জনৈক সজল আওয়াস্তি শীর্ষ আদালতে এই সংশোধিত বিলকে ‘অসাংবিধানিক’ দাবি করে পিটিশন দাখিল করেছেন। সজল আওয়াস্তি জানান, সংশোধিত ইউএপিএ বিল মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব করছে। হলফনামায় তাঁর অভিযোগ, সংবিধানের দেওয়া সমতার অধিকার, স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘন করছে কেন্দ্রের সংশোধিত বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন।
ইউপিএ আইন, ২০১৯ এর ৬ নম্বর অধ্যায় ও ৩৫ এবং ৩৬ নম্বর ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন মামলাকারী। ওই পিটিশনে বলা হয়, সংশোধিত ইউএপিএ আইনের মাধ্যমে শুধুমাত্র সন্দেহের বশে কাউকে জঙ্গি বলে গ্রেফতার করা যাবে। কিন্তু সেই সন্দেহ মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ার পর ওই ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা কালিমালিপ্ত হবে না, তার নিশ্চয়তা কি? তাই এই সংশোধিত আইন মানুষের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী বলে দাবি করেছেন মামালাকারী।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে ইউএপিএ সংশোধনী বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় যুক্তি দিয়েছিলেন, এবার সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ঠেকাতে অনেকাংশে কার্যকর হবে সরকার। আর্বান নকশালদেরও রেয়াত করা হবে না বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। যদিও এই সংশোধনী আইনের ফলে সরকারের বিরোধিতা করলেই সন্ত্রাসবাদী বলা যাবে বলে পাল্টা দাবি করেছিল বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, এই সংশোধিত আইনকে হাতিয়ার করে সরকারের সঙ্গে কেউ এক সুরে কথা না বললেই তাঁকে দেশদ্রোহী দেগে দেওয়া যাবে। তবে বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে পাশ হয়ে যায় সংশোধিত ইউএপিএ বিল।

Comments are closed.