দশেরায় রাবণ পোড়ানো দেখতে গিয়ে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা অমৃতসরে, মৃত কম পক্ষে ৬০

পঞ্জাবের অমৃতসরের জোড়া ফটক এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্রেনের ধাক্কায় মৃতের সংখ্যা ৬০ ছাড়াল। আহতের সংখ্যা প্রায় ৫০, যাঁদের মধ্যে ১৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন।
শুক্রবার অমৃতসরের চৌরা বাজার জোড়া ফটক এলাকায় বিজয়া দশমী ও দশেরা উপলক্ষ্যে রাবণ এর কুশ পুতুল পোড়ানোর অনুষ্ঠান চলছিল। এদিন এই রাবণ পোড়ানো দেখতে এলাকায় প্রচুর মানুষ জড়ো হন। বিপত্তি বাধে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা নাগাদ। রাবণ দহন শুরু হতেই, বাজি ও আগুনের ফুলকি ছুটে আসতে শুরু করে দর্শকদের দিকে। আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। অনেকেই দৌড়ে পাশের ট্রেন লাইনে গিয়ে দাঁড়ান। কিন্তু সেটাই কাল হয় তাঁদের। আপ ডাউনে দুটি লাইনেই প্রায় ৩০০ জন মানুষ সেখানে জড়ো হন। সে সময় দুটি লাইন দিয়েই পরপর চলে আসে একটি লোকাল ট্রেন ও অমৃতসর-হওড়া মেল। মুহূর্তের মধ্যে ট্রেনের তলায় চাপা পড়েন শতাধিক মানুষ। ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় অনেকের দেহ। ঘটনাস্থলেই প্রায় ৪০ জন মারা যান। স্থানীয়দের মতে ওই মুহূর্তে রেলওয়ে ট্র‍্যাক দুটিতে প্রায় ৩০০ মানুষ ছিলেন। মৃতদের মধ্যে ৩১ জনের দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ ও আহতদের পরিবার পিছু ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্যের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে যান। তিনি মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা করে সাহায্যের কথা জানিয়েছেন।
কিন্তু কেন ঘটল এরকম ভয়াবহ ঘটনা, তা নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। রেল কেন ওই সময় ওই এলাকা দিয়ে ট্রন চালাল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান অশ্বীনি লোহানি জানিয়েছেন, এতে রেলের কোনও গাফিলতি নেই। উত্তর রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ওই স্থানে রেল লাইনের এত কাছে যে এরকম অনুষ্ঠান করা হচ্ছে তা স্থানীয় প্রশাসন তাদের জানায়নি। রেল লাইনের ১০০ মিটারের মধ্যে এই অনুষ্ঠান করাও বেআইনি বলে রেলের দাবি। অনুষ্ঠানে স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক নভজত কৌর সিধুর উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ঘটনার পৃথক পৃথক তদন্ত করা হচ্ছে পঞ্জাব প্রশাসন ও রেলের তরফে।

Comments are closed.