গাড়ি কেনায় আকাঙ্খা নেই তরুণ প্রজন্মের, বদলের জন্য তৈরি হোক গাড়ি সংস্থা, পরামর্শ এশিয়ার ধনীতম ব্যাঙ্কারের

বর্তমান প্রজন্ম আর গাড়ি কেনার আকাঙ্খা করে না। তাঁর ছেলেও যাতায়াতের জন্য নির্ভর করেন অ্যাপ ক্যাবের উপর, মন্তব্য এশিয়ার ধনীতম ব্যাঙ্কার উদয় কোটাকের।
দেশের গাড়ি বাজারে তীব্র সঙ্কট, চাহিদার অভাব আর কড়া জিএসটির গেরোয় পর্যায়ক্রমে উৎপাদন বন্ধ রাখছে দেশের অটোমোবাইল সংস্থাগুলি। গাড়ি শিল্পের এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার ও গাড়ি সংস্থা, দুই তরফকেই নতুন করে ভাবনা-চিন্তার পরামর্শ দিলেন উদয় কোটাক। সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফাকচারার্সের (সিয়াম) বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গাড়ি শিল্পের বর্তমান পরিস্থিনি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন কোটাক ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান উদয় কোটাক। বলেন, এখন গাড়ি কেনার ব্যাপারে কারও আকাঙ্খা নেই। এই বাস্তবতাকে মেনে অটোমোবাইল সংস্থাগুলির উচিত নতুন স্ট্র্যাটেজি নেওয়া, প্রয়োজন কাঠামোগত পরিবর্তন। সেই সঙ্গে সরকারি হস্তক্ষেপও সমান দরকারি বলে মন্তব্য করেন উদয় কোটাক। এই প্রসঙ্গে উদাহরণ দিতে গিয়ে এশিয়ার ধনীতম ব্যাঙ্কার বলেন, তাঁর ছেলেও যাতায়াতের জন্য বেছে নেন ওলা বা উবারের মতো অ্যাপ ক্যাব। গাড়ি কেনার কথা আর চিন্তা করে না নতুন প্রজন্ম।
গাড়ি শিল্পে এই গভীরতম সঙ্কট কাটানোর উপায়ও বাতলে দিয়েছেন উদয় কোটাক। তাঁর মতে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও চাহিদার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নতুন চিন্তা-ভাবনা করতে হবে গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাগুলিকে। বিশ্ববাজারে টেক্কা দেওয়ার জন্য উন্নতমানের গাড়ি তৈরি করতে হবে। ক্রমাগত টাকার দাম পড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে অটোমোবাইল সংস্থাগুলির উচিত রফতানির উপর জোর দেওয়া, মন্তব্য উদয় কোটাকের। তাঁর কথায়, ‘বর্তমান সময়ে আমাদের উচিত সাহসী পদক্ষেপ করা, তবেই গাড়ি শিল্পের পরিস্থিতির বদল হবে’।
গত মাসে ঠিক একইরকম মন্তব্য করেছিলেন, বাজাজ অটোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজীব বাজাজ। তিনিও গাড়ি রফতানিতে জোর দেওয়ার কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার লক্ষ্যে ঝাঁপাতে হবে তাঁদের।
গাড়ি শিল্পে নজিরবিহীন মন্দার কোপে পর্যায়ক্রমে উৎপাদন বন্ধ রাখছে মারুতি সুজুকি, অশোক লেল্যান্ডের মতো দেশের বড় বড় গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাগুলো। প্রায় প্রতিমাসেই চলছে কর্মী ছাঁটাই, উৎপাদন বন্ধের ফলে রুজি-রোজগার বন্ধ হওয়ার উপক্রম গাড়ি শিল্পে যুক্ত হাজার হাজার কর্মীর। অটোমোবাইল শিল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষ, অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যাও প্রায় একই।

Comments are closed.