ভারভারা রাওসহ মানবাধিকার কর্মীদের গৃহবন্দির সময়সীমা বেড়ে ১৯ সেপ্টেম্বর

আরও এক দফা গৃহবন্দি থাকার সময়সীমা বাড়ল ভারভারা রাওসহ ভিমা কোড়েগাঁও কাণ্ডে মাওবাদী সংযোগ সন্দেহে পুণে পুলিশের হাতে ধৃত ৫ বিশিষ্ট সমাজ কর্মীর। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের গৃহবন্দির সময়সীমা বাড়িয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর করেছে। এর আগে তিন দফায় প্রথমে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, দ্বিতীয় দফায় ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ও তৃতীয় দফায় ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ধৃত সমাজকর্মীদের গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে বলা হয়, এভাবে যদি সব ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয় তা হলে ভুল বার্তা যাবে। তাই শীর্ষ আদালতের উচিত অন্য আদালতে এই মামলা পাঠিয়ে দেওয়া, কারণ এই ঘটনার সাথে যুক্ত কয়েকটি মামলা অন্যন্য নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। এদিন কেন্দ্র কোর্টে এও জানায় যে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অভিযুক্তরা সুবিধা পেলে তা দেশের ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে। মহারাষ্ট্র সরকারও এদিন কোর্টকে জানায়, শীর্ষ আদালতের এই ঘটনায় এখনই হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। তবে জবাবে দেশের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বিশেষ বেঞ্চ এদিন জানায়, এই ঘটনায় দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের নাম জড়িত, তাই যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন, এতে কোর্টের যদি মনে হয় হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন তবে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করা হবে।
বিশিষ্ট এই পাঁচ সমাজ কর্মীর গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিলেন ঐতিহাসিক রোমিলো থাপারসহ বেশ কয়েকজন।
মাওবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে সপ্তাহ দু’য়েক আগে একই সঙ্গে দিল্লি, মুম্বই, রাঁচি, গোয়া, ফারিদাবাদ, হায়দরাবাদের মতো দেশের একাধিক শহরে ১০ জন বিশিষ্ট সমাজকর্মীর বাড়িতে অভিযান চালায় পুণে পুলিশ। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের ভীমা কোড়েগাঁওয়ে দলিত ও উচ্চ বর্ণের সংঘর্ষের ঘটনায়, মাওবাদীদের সঙ্গে যোগ আছে বলে গ্রেফতার করা হয় ভারভারা রাও, অরুণ ফেরেরা, গৌতম নওলাখা, সুধা ভরদ্বাজ, ভার্ণন গঞ্জালভেসের মতো কবি, লেখক, আইনজীবীদের। তাঁদের আরবান নকশাল তকমা দিয়ে পুলিশ দাবি করে, ধৃতদের সঙ্গে মাওবাদীদের সম্পর্ক রয়েছে এবিষয়ে সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চিত হয়ে তবেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এবিষয় প্রমাণের জন্য তাঁদের কাছে হাজার হাজার নথি ও চিঠি রয়েছে বলেও দাবি পুলিশের। পুলিশের দাবি, এই বৃহত্তর চক্রান্তের অংশ হিসাবে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরও সংগঠিত করার চেষ্টা চলছিল, যাতে নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়া যায়। এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এর আগে সুরেন্দ্র গ্যাডলিং, রোনা উইলসন, সুধীর ধাওয়ালে, সোমা সেন ও মহেশ রাওয়াত নামে আরও পাঁচ জনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁরা বর্তমানে জেলে রয়েছেন।

Comments are closed.