রাহুল গান্ধী নন, অমিত শাহের কথায় চলছে কেরল কংগ্রেস, সাবরীমালা ইস্যুতে উত্তপ্ত বিধানসভায় বললেন পিনারাই বিজয়ন

সাবরীমালা ইস্যুতে রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত হচ্ছে কেরল। লোকসভা ভোট যতই এগোচ্ছে ততই সাবরীমালা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে বিজেপি এবং তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই ইস্যুতে কার্যত বিজেপির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে কেরল কংগ্রেস। এই পরিস্থিতির মধ্যেই কেরলে তিন দিন আগে হওয়া ৩৯ টি পুরসভা ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ২১ টি সিট জিতেছে সিপিএম।
জাতীয় কংগ্রেস সাবরীমালা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে প্রথম দিকে স্বাগত জানালেও, কেরল কংগ্রেস যে সম্পূর্ণ উলটো পথে হেঁটে সব বয়সী মহিলার মন্দিরে প্রভবেশাধিকারের বিরোধিতা করছে তা নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করছে কেরলে। কেরল সিপিএমের বক্তব্য, কংগ্রেসের এই অবস্থানের জন্যই সেই রাজ্যে পায়ের তলায় শক্ত জমি পাচ্ছে বিজেপি। এরই মধ্যে সোমবার কেরল বিধানসভা উত্তপ্ত হয়ে উঠল কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং কংগ্রেস নেতা রমেশ চিন্নাথালার মধ্যে বাদানুবাদে। যার জেরে, সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বলেন, রাহুল গান্ধী নন, অমিত শাহের কথায় চলছে কেরল বিজেপি
সাবরীমালা মন্দির ইস্যুতে সোমবার সরগরম হয়ে ওঠে কেরল বিধানসভা। এই ইস্যুতে দৃঢ় অবস্থান নিলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রবল চাপের মুখে পিনারাই নেতৃত্বাধীন সিপিএম সরকার। সাবরীমালা প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা রমেশ চিন্নাথালা সোমবার বিধানসভায় প্রশ্ন তোলেন, আরএসএস নেতা বালসান থিলেঙ্কারি কীভাবে গত মাসের শেষে সাবরীমালার অদূরে সভা করতে পারলেন? সাবরীমালা ইস্যুতে রাজ্য সরকারের এই ভূমিকার প্রতিবাদে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফের ৩ বিধায়ক অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন করবেন বলে ঘোষণা করেন তিনি।
এরপর, রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বকে তীব্র আক্রমণ করেন বিজয়ন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গেরুয়া ব্রিগেডের সঙ্গে কোনও পার্থক্য নেই কংগ্রেসের। বিজেপি-আরএসএসের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক ভালোই তা বোঝা যাচ্ছে।’ কংগ্রেসকে আরএসএসের ‘বন্ধু’ বলেও তোপ দাগেন বিজয়ন। এরপর বিধানসভায় শুরু হয় প্রবল বিতর্ক। বাম ও কংগ্রেস বিধায়কদের তর্ক-বিতর্কে ছেদ টানেন স্পিকার পি শ্রীরামকৃষ্ণণ। তিনি দু’পক্ষের সমালোচনা করে বলেন, বিধানসভার কোয়েশ্চেন আওয়ার বিতর্ক সভায় পরিণত হচ্ছে।
এরপরেও উত্তাপ কমেনি। বিরোধী বিধায়করা দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এই পরিস্থিতিতে স্পিকার মঙ্গলবার পর্যন্ত বিধানসভা মুলতুবি ঘোষণ করে দেন। গত সপ্তাহেও সাবরীমালা ইস্যুতে বিধানসভা উত্তপ্ত হয়ে পড়ায়, মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছিল অধিবেশন।
এদিকে, অধিবেশন মুলতুবির হওয়ার পর কংগ্রেসের ভি এস শিবকুমার এবং আইইউএমএলের পারাকল আবদুল্লা ও এন জয়রাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসেন।
প্রসঙ্গত, কেরল সরকার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুযায়ী সব বয়সী মহিলা সাবরীমালা মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে পারবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু আরএসএস ও বিজেপি সমর্থকরা মন্দিরের ঐতিহ্যের দোহাই দিয়ে প্রবল বিক্ষোভ শুরু করে। যার জেরে কোনও মহিলা এখনও মন্দিরে যেতে পারেননি।

Comments are closed.