অন্ধ্রের পথে বাংলা, সিবিআইকে রাজ্যে তদন্তের অনুমতি প্রত্যাহার করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বাংলাতেও সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবারই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিল, সিবিআইকে এরাজ্যে তদন্ত করার অনুমতি প্রত্যাহার করার। যার ফলে আগামী দিনে সিবিআই এরাজ্যে তদন্ত করতে চাইলে তাকে নতুন করে অনুমতি নিতে হবে। লোকসভা ভোটের আগে যখন চিট ফান্ড মামলায় তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে শুরু করে একাধিক পুলিশ কর্তাকে রাজনৈতিক কারণে ডাকাডাকি করে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে রাজ্যে শাসক দলের অভিযোগ, তার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ।
এর ফলে ফের নতুন করে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালেন চন্দ্রবাবু নাইডু এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের প্রাথমিক অনুমতি ছাড়া অন্ধ্রে কোনও তদন্তকার্য চালাতে পারবে না সিবিআই, সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে বা অনুমতি না নিয়ে কোনও তল্লাশি বা তদন্ত অন্ধ্র প্রদেশে চালাতে পারবে না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী কোনও রাজ্যে কর্মরত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে বা কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসে তল্লাশি করতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অনুমতি নিতে হয় সিবিআইকে। এই অনুমতি ১৯৮৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিবিআইকে দিয়েছিল।
শুক্রবার দুপুরেই জানা যায়, অন্ধ্র প্রদেশ সরকার সম্প্রতি এই বিশেষ অনুমতি প্রত্যাহার করেছে। তা জেনে এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের মিটিংয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, চন্দ্রবাবু নাইডু ঠিক কাজ করেছেন। বাংলাতেও তিনি এই কাজ করার কথা ভাবছেন। দরকারে সিবিআইকে এরাজ্যে ঢুকতে দেবেন না। এরপর শুক্রবারই সন্ধ্যায় এই নির্দেশ জারি করে রাজ্য সরকার। এর ফলে সিবিআইকে এরাজ্যে তদন্ত বা তল্লাশি করতে হলে ফের রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে।
রাজ্যের চিট ফান্ড তদন্ত নিয়ে সিবিআই-এর ভূমিকার বারবার সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রীসহ তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোট এলেই রাজনৈতিক কারণে সিবিআইকে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এবার লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকার সিবিআইকে এরাজ্যে তদন্ত করার অনুমতি প্রত্যাহার করায় কেন্দ্রের সঙ্গে নতুন সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Comments are closed.