ইতিহাসবিদ হরিশঙ্কর বাসুদেবনের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট স্ত্রীর, আমরির বিরুদ্ধে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ

গত মাসের ১০ তারিখ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ইতিহাসবিদ হরিশঙ্কর বাসুদেবনের। তার ঠিক একমাস পর সিনিয়র সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তাঁর বোন তথা বাসুদেবনের স্ত্রী এবং ইতিহাসবিদ তপতী গুহ ঠাকুরতার একটি পোস্ট।
সেই পোস্টে তপতী গুহ ঠাকুরতা জানিয়েছেন, স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর তিনি এবং মেয়ে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। তাই স্বামীর মৃত্যুর পর বিভিন্ন সংবাদপত্রে শোকবার্তা কিংবা মৃত্যুর সংবাদ পড়ার ইচ্ছে তাঁদের ছিল না। একমাস বাদে কিছু প্রতিবেদন পড়ে তিনি হতবাক। অধ্যাপক গুহ ঠাকুরতা পোস্টে অভিযোগ করেছেন, হরি বাসুদেবনের মৃত্যু নিয়ে প্রকাশিত সংবাদগুলো পুরোটাই ভুয়ো। খবরের উৎস হিসেবে বলা হয়েছে ‘সল্টলেকের আমরি হাসপাতাল এবং হরিশঙ্কর বাসুদেবনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর কোভিড ১৯ এ মৃত্যু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাঁর অন্য ক্রনিক সমস্যা ছিল।’ তপতী গুহ ঠাকুরতা বলছেন, এই তথ্য ভয়াবহরকম অসত্য। প্রতিবেদনগুলোতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিংবা ডাক্তারদের সূত্র হিসেবে দেখিয়ে হরিশঙ্কর বাসুদেবনের মৃত্যুর কারণ জানানো হয়। কিন্তু ৬৮ বছরের হরিশঙ্কর বাসুদেবনের কোনও ধরনের ক্রনিক অথবা কোমর্বিডিটি ছিল না, এমনই লিখেছেন স্ত্রী তপতী গুহ ঠাকুরতা। হরিশঙ্কর বাসুদেবনের COPD, অ্যাস্থমা, ফুসফুসে সমস্যা কিংবা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা বা হার্টের সমস্যা ছিল না। আর এই কারণেই বাসুদেবনের মৃত্যুর উল্লিখিত কারণ শুনে আমি এবং আমাদের পরিবারের সদস্যরা হতবাক হয়ে যাই।
আর এক জায়গায় তিনি লিখেছেন, আমরি হাসপাতাল যেভাবে ফেক নিউজ ছড়াল তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। যেভাবে তাঁর মৃত্যুকে কোমর্বিডিটির দোহাই দেওয়া হল, তাতে সেই সন্দেহই অক্সিজেন পায়।
পোস্টে তপতী গুহ ঠাকুরতা আরও লিখেছেন, আমরি সল্টলেকের কোভিড ইউনিটে যে ৫ দিন হরিশঙ্কর বাসুদেবনকে কাটাতে হয়েছিল, তার কোনও রিপোর্ট আমি পাইনি। আমি আজও জানি না হরিশঙ্কর বাসুদেবনের ঠিক কী হয়েছিল। কিন্তু হরিশঙ্কর বাসুদেবনের মতো একজন মানুষ আচমকা কীভাবে মারা যেতে পারেন, তা জানার অধিকার তাঁর সকল শুভানুধ্যায়ীর আছে বলেই মনে করি।

ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় তাঁরা আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেখান থেকে জানানো হয়, হাসপাতাল থেকে এই সংক্রান্ত কোনও বক্তব্য দেওয়া হয়নি এবং হরিশঙ্কর বাসুদেবনের ডেথ সার্টিফিকেটে কোমর্বিডিটির উল্লেখ নেই।

Comments are closed.