সাবরীমালা ইস্যুতে মহিলাদের সমানাধিকারের দাবিতে কেরলে সিপিএমের উদ্যোগে ৫০ লক্ষ মহিলার নজিরবিহীন মানব প্রাচীর

২০১৯ সালের ১ লা জানুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিনের সাক্ষী হল কেরল। কেরলে সিপিএমের উদ্যোগে প্রায় ৫০ লক্ষ মহিলাকে নিয়ে গঠিত ‘উইমেন ওয়াল’ বা ‘বানিথা মাথিলের’ মাধ্যমে এক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা রাজ্য। কাসারগড় জাতীয় সড়ক থেকে থিরুভনন্থপুরম পর্যন্ত প্রায় ৬২০ কিলোমিটার রাস্তা এই ‘চেন’ পরিবেষ্টিত হয়। প্রত্যেক কিলোমিটার দূরত্বে ৬৫০ জন মহিলার ‘কোর গ্রুপ’ নেতৃত্ব দেন উইমেন ওয়ালের। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ শুরু হয় ক্যাম্পেন। কাসারগড় যেখান থেকে শুরু হয় মিছিল, তার পুরোভাগে ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা।
সাবরীমালা মন্দির নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে মহিলাদের সমান অধিকারের দাবিতে এই ‘উইমেন ওয়াল’। সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অংশগ্রহণ করে ‘বানিথা মাথিলে’। প্রায় ১৯৪ টি সংস্থা অংশ নেয় উইমেন ওয়াল গড়তে। সাবরীমালা মন্দির ইস্যু প্রধান হলেও ‘উইমেন ওয়ালে’র লক্ষ্য কেরলের জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের মধ্যে ঐক্য তৈরি করা এবং অতি হিন্দুত্ববাদী ভাবনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।
কেরলার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন রাজ্যের সকল স্তরের মহিলাদের ডাক দেন এই উদ্যোগে অংশগ্রহণের জন্য। তিনি একে ‘নবজাগরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ‘উইমেন ওয়ালে’ উপস্থিত ছিলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত, মন্ত্রী কে কে শৈলজা প্রমুখ মহিলা নেত্রী।
সরকারের এই উদ্যোগে সামিল হয়েছেন নানা ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বরা। লেখিকা ডঃ এম লীলাবতী, অভিনেত্রী কে পি ললিতা, রিমা কলিঙ্গল, কবি বিজয়লক্ষ্মী থেকে বক্সার কে বি লেখা উপস্থিত ছিলেন উইমেন ওয়ালে।
শুধু মহিলাদেরই নয়, হাইওয়ের অন্য ধারে ছিল ‘ম্যান ওয়াল’। অর্থাৎ, ভেদাভেদ মুছে দিয়ে পুরুষ ও মহিলার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে এই পদক্ষেপ সরকারের।
এই ইভেন্ট শেষে একাধিক জায়গায় মিটিং হয়। প্রতিটি সভায় বক্তা হিসেবে ছিলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বরা। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ভেল্লায়াবালমে।

Comments are closed.