‘কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে’, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার আগেই অভিযোগ ইমরানের। পেছনে পাক সেনার হাত দেখছে ভারত।

পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতায় বসার আগেই ফল ঘোষণার মাঝে কাশ্মীর ইস্যু তুলে ভারতকেই কার্যত কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বিশ্বকাপ ক্রিকেট জয়ী অধিনায়ক এবং পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ (পিটিআই)পার্টির প্রধান ইমরান খান। বুধবার পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যে থেকেই শুরু হয়েছিল গণনা। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায়, পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে অনেক পেছনে ফেলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিকে এগোচ্ছে পিটিআই।
এদিন বিকেলে পুরো ফল প্রকাশের আগেই দেশের ভাবী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ইসলামাবাদে সাংবাদিক বৈঠক করেন। প্রথম সাংবাদিক বৈঠকেই কাশ্মীর প্রসঙ্গে তোলেন ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ী পাকিস্তান অধিনায়ক। সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই ভারতের সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, নির্বাচনের আগে ভারতের সংবাদমাধ্যম তাঁকে ‘ভিলেন’ হিসেবে তুলে ধরেছিল। এরপরেই কাশ্মীর প্রসঙ্গে তুলে ইমরান বলেন, সেনাবাহিনী দিয়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করা যাবে না। কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। যেখানেই সেনার সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়, সেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, ভারত এবং পাকিস্তান একে অন্যের বিরুদ্ধে দোষারোপ করেও সমস্যা মিটবে না। ভারতের পক্ষ থেকে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে সব সময়ই পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হয়। কিন্তু তাতে শান্তি ফিরবে না। সমস্যা মেটানোর জন্য দু’দেশকে আলোচনায় বসতে হবে। ইমরান বলেন, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি উপমহাদেশের শান্তি রক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু করা দরকার বলেও জানান ইমরান খান।
এদিকে ক্ষমতায় বসার আগেই যেভাবে কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে ইমরান অভিযোগ তুলেছেন, তা নিয়ে এদিন কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া মেলেনি ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। তবে সূত্রের খবর, ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফের এই বিপুল জয়ের পেছনে পাক সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কিনা তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। পাকিস্তানেই এই অভিযোগ সামনে এসেছে কয়েকদিন ধরে। আন্তর্জাতিক মহলেও জল্পনা, পাকিস্তানে ফের শক্তিশালী হচ্ছে সেনা। এবং ইমরানকে প্রধানমন্ত্রী করতে পাক সেনাবাহিনী এবার নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। পাক সেনাবাহিনীকে খুশি করতেই কি ইমরান প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার আগেই কাশ্মীর ইস্যু তুলে ভারতকে দোষারোপের রাজনীতি শুরু করলেন, এই প্রশ্নও উঠছে এদেশের শীর্ষ আধিকারিকদের মধ্যে। আপাতত পাকিস্তানের রাজনৈতিক গতিবিধির দিকে নজর রাখছে ভারত।

Leave A Reply

Your email address will not be published.