জানেন, ২৯ জানুয়ারি যে সাংবিধানিক বেঞ্চে অযোধ্যা মামলার শুনানি শুরু, তার বিচারপতি কারা, অতীতে তাঁরা কী রায় দিয়েছেন

আগামী ২৯ শে জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে শুরু হচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত এবং বিতর্কিত রাম জন্মভূমি ও অযোধ্যায় রাম মন্দির মামলার শুনানি। দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। শুক্রবার চূড়ান্ত হয়েছে এই সাংবিধানিক বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতির নাম। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বাদে এই বেঞ্চের অন্য চার বিচারপতি হলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি আবদুল নাজির, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এস এ বোবদে।
এর আগে এই মামলার শুনানির জন্য যে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গঠিত হয়, সেখানে নাম ছিল বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের। তবে গত ১০ জানুয়ারি শুনানির প্রথম দিন তিনি এই বেঞ্চ থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন। কারণ, এই মামলার আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান ইউ ইউ ললিতের বিচারপতি পদে থাকা নিয়ে আপত্তি করেছিলেন, কারণ ললিত আগে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যান সিংহের হয়ে লড়েছিলেন। তাই স্বার্থের সংঘাত বাধতে পারে বলে আপত্তি জানান ওই আইনজীবী। এরপর সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করেন ইউ ইউ ললিত। এছাড়াও এর আগে, এই মামলার সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারপতি হিসাবে এন ভি রামান্নার নাম থাকলেও, তিনি এই বেঞ্চে থাকছেন না। ইউ ইউ ললিত ও এন ভি রামান্নার জায়গায় নয়া সংযোজন বিচারপতি অশোক ভূষণ ও আবদুল নাজির।

ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়
ইনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। তাঁর বাবা ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় ছিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের যে সকল যুগান্তকারী রায়ের সাথে যুক্ত ছিলেন ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ব্যক্তি গোপনীয়তার অধিকারের স্বীকৃতি, সমকাম অপরাধ নয় বলে ধারা ৩৭৭ কে অসাংবিধানিক ঘোষণা ও পরকীয়াকে বৈধতা প্রদানকারী রায়। আধার কার্ডকে সাংবিধানিক বলে যে বেঞ্চ রায় দিয়েছিল তারও সদস্য ছিলেন চন্দ্রচূড়, অবশ্য তিনি বাকি বিচারপতিদের সঙ্গে এক্ষেত্রে সহমত পোষণ করেননি।

আবদুল নাজির
ইনি কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। দেশের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত তিন জন বিচারপতি আছেন, যাঁরা কোনও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি না হয়েও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নির্বাচিত হয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম নাজির।
লিভ-ইন সম্পর্কে থেকে যদি কেউ স্বেচ্ছায় নিজের সঙ্গীর সঙ্গে যৌনাচারে লিপ্ত হন তবে তা ধর্ষনের আওতায় আসবে না বলে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে রায় দিয়েছে তার সদস্য ছিলেন আবদুল নাজির। এছাড়াও তিন বিচারপতি যে বেঞ্চ সম্প্রতি ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় তদন্তকারী সংস্থাকে রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীর ২০১১-১২ সালের ট্যাক্স ফাইল ফের যাচাই করার অনুমতি দিয়েছে তারও সদস্য ছিলেন নাজির।

অশোক ভূষণ
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় রাহুল ও সোনিয়া গান্ধীর ট্যাক্স ফাইল পুনর্মূল্যায়ন সংক্রান্ত যে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ দেয় আবদুল নাজিরের মতো বিচারপতি অশোক ভূষণও তার সদস্য ছিলেন। ইনি কেরালা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। এছাড়াও মুম্বইয়ে ডান্স বার বন্ধ করা যাবে না বলে (মহারাষ্ট্র সরকারের আবেদন খারিজ করে) যে রায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ দিয়েছে, তার অন্যতম সদস্য হলেন অশোক ভূষণ।

এস এ বোবদে
ইনি মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। সরকারি পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে আধার বাধ্যতামূল নয় বলে রায় দিয়েছিলেন তিনি।

Comments are closed.