হাসপাতালের উপর চাপ কমাতে প্রতিটি পুরসভা ও থানা এলাকায় সেফ হোমের সিদ্ধান্ত নবান্নের

রাজ্যে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ৫৯ হাজার ছুঁইছুঁই। শুধু কলকাতাতেই সংক্রমিতের সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি। রাজ্য সরকারের তরফে করোনার নমুনা পরীক্ষায় জোর দিতেই সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে দাবি। রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেলেও তাঁদের অধিকাংশই উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গ যুক্ত। তাই কোভিড হাসপাতালে ভর্তির বদলে এই রোগীদের নিরাপদ ও আইসোলেট করে রাখার জন্য বাড়ছে কোয়ারেন্টিন সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা। এই পরিস্থিতিতে জেলায় জেলায় সেফ হোমের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিল নবান্ন। সরকারি সূত্রে খবর, কোয়ারেন্টিন সেন্টারের জন্য রাজ্যের প্রতিটি পুরসভা এবং থানা এলাকায় উপযুক্ত জায়গা খুঁজতে বলা হয়েছে। বিশেষত হোটেল, স্টেডিয়াম, বিয়েবাড়িতে সেফ হোম তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ পুর এলাকাগুলিতে দরকারে একাধিক সেফ হোম করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। তবে কোথায় কোথায় সেই সেফ হোম তৈরি হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য দফতর।

করোনা পরিস্থিতিতে গত জুন মাসে কোয়ারেন্টিন সেন্টারের পাশাপাশি সামান্য উপসর্গ যুক্ত বা উপসর্গহীন রোগীদের জন্য পুর এলাকায় সেফ হোম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। যার ভূয়সী প্রশংসা করেছে আইসিএমআর। বর্তমানে রাজ্যে ১০৯ টি সেফ হোম রয়েছে। সেখানে শয্যা সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। হাসপাতালে বেড আটকে রাখার প্রবণতা আটকাতেই সেফ হোম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।

বর্তমানে রাজারহাটের হজ হাউস, কলকাতার আনন্দপুর, তোপসিয়া, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, যাদবপুর কিশোর ভারতী স্টেডিয়াম, খড়দহ পুরসভার বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামের ইত্যাদি বেশ কিছু জায়গায় সেফ হোম তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও প্রয়োজন মিটছে না। তাই এবার রাজ্যের সব পুরসভা এবং থানাকে বলা হয়েছে, নিজেদের এলাকায় হোটেল, স্টেডিয়াম, বিয়েবাড়িতে এই সেফ হোমের জন্য চিহ্নিত করতে। বলা হয়েছে, কমপক্ষে ১০০ থেকে ২০০ জন থাকতে পারেন এমন আশ্রয় চিহ্নিত করতে। সঙ্গে থাকতে হবে বাথরুম সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। সেফ হোমগুলির সঙ্গে সরাসরি হাসপাতালের যোগাযোগ থাকবে। রোগীদের জন্য চিকিৎসক দল এবং অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা হবে।

পুরসভা ও থানা সেফ হোমের জন্য যে তালিকা জমা দেবে সেটা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা খতিয়ে দেখবেন সংশ্লিষ্ট জেলার সিএমওএইচ। তারপর সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য দফতর।

প্রাথমিকভাবে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলিতে খুব তাড়াতাড়ি এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। কারণ, ওই পাঁচ জেলাতেই করোনা রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। আস্তে আস্তে রাজ্যের প্রতিটি পুরসভা ও থানা এলাকায় চালু হয়ে যাবে সেফ হোম।

Comments are closed.