আইটি সেক্টরে চাকরি। রাজনীতি নিয়ে তেমন আগ্রহী ছিলেন না কোনওদিন। তবে এবারের পরিস্থিতি আলাদা। আজন্ম বামপন্থী স্বামী এবার বিজেপি প্রার্থী! স্বামীর পাশাপাশি শিলিগুড়িতে বিজেপির হয়ে প্রচার সারছেন শঙ্কর ঘোষের স্ত্রী সুদীপা চৌধুরী।
দীর্ঘ ৩০ বছর সিপিএমের সঙ্গে পথ চলার পর, ঠিক ভোটের মুখে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শিলিগুড়ির দাপুটে বাম নেতা শঙ্কর ঘোষ। আর যোগ দেওয়া মাত্রই টিকিটও পেয়ে গিয়েছেন বিজেপির। লড়াই ক’দিন আগে পর্যন্ত শঙ্করের রাজনৈতিক গুরু অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে।
স্বামীর হয়ে প্রচারে বেরিয়ে কী বুঝছেন? আইটি কর্মী সুদীপা বলছেন, একজন জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ থাকবে না, এটা তো সোনার পাথর বাটি। কিন্তু আমি যেটুকু মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি তাতে অবাকই হয়েছি। শঙ্করকে নিয়ে কারোর কোনও অভিযোগ নেই।
কথায় কথায় সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য্যের প্রসঙ্গ উঠে এল। পোড়খাওয়া বাম নেতার বিষয়ে বলতে গিয়ে কিছুটা অভিমানের সুর সুদীপার গলায়। বললেন, শঙ্কর সিপিএম ছাড়ার পর অশোকদা আর সম্পর্ক রাখেননি। এটা হতেই পারে। তবে সবচেয়ে কষ্ট পেয়েছি অশোকদা শঙ্করকে নিয়ে আপত্তিজনক কথা বলায়। এটা না করলেই পারতেন।
স্বামীর সঙ্গে অশোক ভট্টাচার্যের সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে বললেন, অশোকদাকে নিয়ে শঙ্করের মনে একটা গভীর শ্রদ্ধার জায়গা রয়েছে। স্বামীর দলত্যাগ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে জানালেন, তীব্র মনকষ্ট নিয়ে সিপিএম ছেড়েছে। সেই সঙ্গে এও বললেন, শঙ্করের সামনে দলত্যাগ ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না।
আপনার স্বামী বিজেপি প্রার্থী, একজন সাধারণ ভোটার হিসেবে প্রার্থীর কাছে কী প্রত্যাশা করছেন? হেঁসে জানান, অবশ্যই, আমার তো ব্যক্তি পরিচয় আছে। শিলিগুড়ির ভোটার হিসেবে দাবিদাওয়া প্রচুর। প্রথমত এখানে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। এছাড়াও শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটা সমস্যা আছে। সেই সঙ্গে জানালেন, তরাই-ডুয়ার্স সহ শিলিগুড়ির পর্যটন শিল্পে বিপুল সম্ভাবনার কথা। পর্যটন শিল্পে সামগ্রিক পরিকাঠামো আরও উন্নত করতে হবে।
স্বামীর জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী? সুদীপার আত্মবিশ্বাসী উত্তর, শঙ্কর যেভাবে সারাবছর মানুষের পাশে থাকেন তাতে এই আসন জিতছেন শঙ্করই।