বিজেপি সমাজে বিভাজন তৈরির ষড়যন্ত্র করছে বলে দল ছাড়লেন উত্তর প্রদেশের দলিত সাংসদ

লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে জোর ধাক্কা। দল ছাড়লেন উত্তর প্রদেশের বাহারাইচের সাংসদ সাবিত্রী বাঈ ফুলে। তাঁর দল সমাজে বিভাজন তৈরির ষড়যন্ত্র করছে, গেরুয়া শিবির ছেড়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এই মন্তব্য করলেন বাহারাইচের বিজেপি সাংসদ। শুধু তাই নয়, বিজেপি এদেশে সংবিধানকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন দলত্যাগী সাংসদ।
বেশ কিছুদিন ধরেই সাবিত্রী বাঈ ফুলের সঙ্গে তাঁর দলের সংঘাত চলছিল। কিন্তু পরিণতি যে এত দ্রুত চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছবে সেটা আন্দাজ করতে পারেনি দল। শেষ পর্যন্ত দল ছেড়েই দিলেন উত্তরপ্রদেশের বাহারাইচের সাংসদ সাবিত্রী বাঈ ফুলে। তবে ইস্তফা দেওয়ার সময় তাঁর মন্তব্য যে আরও বিতর্ক সৃষ্টি করল তা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য, এর আগে পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ আলি জিন্নাকে মহাপুরুষ এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি মহান অবদান রেখেছিলেন বলে বিরাট বিতর্ক জাগিয়ে তুলেছিলেন, পাশাপাশি দলেকেও অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন তিনি। সম্প্রতি রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হনুমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। রাজ্যের এক নির্বাচনী প্রচারসভায় তিনি বলেন, ‘হনুমান ছিলেন দলিত ও বনবাসী।’ যোগীর ওই মন্তব্যের পরই দেশজুড়ে প্রতিবাদ করে একাধিক হিন্দু সংগঠন। রাজস্থানে যোগীর বিরুদ্ধে মামলাও হয়। একই সঙ্গে, ভীম সেনা প্রধান চন্দ্রশেখর ঘোষণা করেন, দলিতদের উচিত দেশের সব হনুমান মন্দির দখল নেওয়া ও সেখানে দলিত পুরোহিত নিয়োগ করা।
যোগীর ওই মন্তব্যের পরই মুখ খোলেন দলিত নেত্রী সাবিত্রী ফুলে। তিনি বলেন, হনুমান দলিত ছিলেন এবং তিনি ছিলেন মনুবাদী সমাজের দাস। তিনি রামের জন্য অনেক কিছুই করেছিলেন। তাহলে তাঁর লেজ কেন? তাঁর মুখ কালো কেন? তাঁকে বানর করা হল কেন? তিনি যখন এতটাই রামভক্ত তখন তাঁকে মানুষ হিসেবেই দেখানো উচিত ছিল। দলিত হওয়ার কারণে তাঁকে বহু অপমান সহ্য করতে হয়েছে। আমরা দলিতরা কি মানুষ নই? এবার সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ এবং দলত্যাগ করে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে সাংসদ সাবিত্রী বাঈ ফুলের মন্তব্য বিশেষ করে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির পক্ষে শুধু অস্বস্তির নয়, জোর ধাক্কা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

Comments are closed.